পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোগল-বিদুষী
সম্রাটের শ্রুতিগোচর হইলে, তিনি বলিয়া পাঠাইলেন, ‘খাঁকে বল—ধৈর্য্য বিনা উপায় নাই। এই নিদারুণ শোকে খাঁর অপেক্ষা আমি অধিকতর মর্ম্মপীড়িত, কিন্তু সম্মুখে শোণিতলোলুপ নিদারুণ শত্রু—কেবল প্রতিশোধতৃষ্ণায় অসীম ধৈর্য্যে হৃদয় বাঁধিয়া রাখিয়াছি।”

 যৌবনের পূর্ণ গরিমায়, বীরত্বের শ্রেষ্ঠ মহিমায়, আত্মদানের অবিনশ্বর গৌরবে, তেত্রিশ বর্ষ বয়সে মীর্জ্জা হিন্দাল্ অক্ষয়লোকে প্রয়াণ করিলেন (২০ নবেম্বর, ১৫৫১)।

 হিন্দালের মহিমময় মৃত্যু-সংবাদ কাবুলে পৌঁছিল। গুল্‌বদন্ বুক-ফাটা শোকে কাতর হইলেন। গুমরিরা গুমরিয়া তাঁহার মর্ম্মরোদন কঠোর পর্ব্বতপ্রদেশ প্রতিধ্বনিত করিল। শৈশবের মধুর দিনগুলি একে একে তাঁহার স্মরণপথে উদিত হইতে লাগিল। শোকভরে তিনি লিখিয়াছেন, ‘না জানি কোন্ নির্দ্দয়-হৃদয় এই নিরপরাধ যুবার অঙ্গে অস্ত্রাঘাত করিয়াছে! হায় খোদা, হিন্দালের পরিবর্ত্তে সাদৎ-ইয়ারকে লইয়া আমায় কেন পুত্রহারা করিলে না; খিজর্‌কে লইয়া আমার হৃদয়ে কেন চিরবৈধব্য বেদনা দিলে না; আর সর্ব্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠবিধান আমার কেন জীবনান্ত করিলে না!’

আয় দরেঘা, আয় দরেঘা, আয় দরেঘা!
আফ্‌তাবম্ শুদ্ নিহান্ দর্ জের-ই-মেঘ!

 হায় রে, হায় রে, হায় রে দুঃখ! আমার সূর্য্য মেঘের আড়ালে ঢাকিয়া গেল!

৩৮