পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
জেব্‌-উন্নিসা
ঐহিক সুখরাশির নেশায় প্রমত্ত মূঢ় মানবের ন্যায় আর কতকাল আমরা পারত্রিক-ব্যাপারে উদাসীন হইয়া, ভগবানের সঙ্গ হইতে দূরে থাকিব?
“একমাত্র ভগবদনুগ্রহই আমাকে সুপথে পরিচালিত করিবার প্রেরণা দান করিতে পারে। সেই প্রকৃত মহান ঈশ্বর বলিয়াছেন,—আমি জীবন ও মৃত্যুর সৃষ্টি করিয়াছি।”

 যাঁহার প্রভাব, প্রতিপত্তি ও ঐশ্বর্য্যের তুলনা নাই, জেব্‌-উন্নিসা সেই মহাভাগ্যবান্‌ ভারতেশ্বরের আদরিণী কন্যা,—ইচ্ছা করিলে যে-কোনরূপ বিলাসব্যসনে আমরণ নিমগ্ন থাকিতে পারিতেন। কিন্তু এই বিদুষী বাদশাহ্‌-দুহিতা সে সকলকে একান্ত অকিঞ্চিৎকর মনে করিয়া, জ্ঞানানুশীলন ও সাহিত্যচর্চ্চাকেই তাহার পুণ্যময় জীবনের ব্রতরূপে গ্রহণ করিয়াছিলেন। বহু মূল্যবান্‌ দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ তাঁহার পুস্তকাগারের গৌরব বৃদ্ধি করিত। এরূপ উচ্চাঙ্গের পুস্তকাগার তখনকার দিনে খুব কমই ছিল। পুস্তকাগারে সংগৃহীত ধর্ম্ম ও সাহিত্য-সম্বন্ধীয় বহু গ্রন্থ তাঁহার জ্ঞানার্জ্জন-স্পৃহা ও পবিত্র জীবনযাপনের সাক্ষ্যস্বরূপ বিদ্যমান ছিল। আবার এই সাহিত্যচর্চা শুধু যে তাঁহার নিজের মধ্যেই নিবদ্ধ ছিল, এমন নহে; তিনি নিজেও যেমন সাহিত্যানুরাগিণী, সাহিত্যিকগণের সাহিত্যানুরাগেরও তেমনই উৎসাহদাত্রী। বহু দুঃস্থ গুণী লেখক তাঁহার নিকট সাহায্য পাইয়া সাহিত্য-সেবার সুযোগলাভ করিতেন। সাহিত্যের উন্নতিকল্পে জেব্‌ অনেক সুপণ্ডিত মৌলবীকে যোগ্য বেতনে নূতন পুস্তক-প্রণয়ণের জন্য,

৬৫