পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুল্‌বদন্

বাবরের প্রিয়তমা মহিষী মাহম্‌ই সকলের অগ্রবর্ত্তিনী হইয়াছিলেন; তিনি আর-সকলকে পশ্চাতে রাখিয়া যথাসম্ভব দ্রুতগতি স্বামিসন্দর্শনে আগমন করেন। বলা বাহুল্য মাহম্, গুল্‌বদন্‌কে সঙ্গে আনিতে ভুলেন নাই। বাবর ইঁহাদের যথারীতি সম্বর্দ্ধনা করিয়া আনিবার জন্য পূর্ব্বেই ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। আলিগড়ের নিকট বাদশাহের লোকজনের সহিত মাহমের সাক্ষাৎ হয়। অতঃপর তিনি যখন আগ্রায় পৌঁছেন (২৭শে জুন, ১৫২৯), তখন রাত্রি হইয়া গিয়াছে। গভীর রাত্রেই প্রাণাধিকা পত্নীর সহিত বাবরের শুভসম্মিলন ঘটিল। কিন্তু চারি বৎসর পূর্ব্বে যে নয়নানন্দ স্নেহের পুত্তলীকে সুদূর কাবুলে দেখিয়া আসেন, তাহার অদর্শনে বাদশাহ্ অধীর হইয়া উঠিলেন। মাহম্ রাত্রি হইবে বলিয়া আগ্রা আসিবার পথে গুল্‌কে আলিগড়েই রাখিয়া আসিয়াছিলেন। যাহা হউক, পরদিন প্রভাতে পিতা ও পুত্রীর সাক্ষাৎ হইল। পূর্ব্বে যখন গুল্ পিতাকে দেখিয়াছিল, তখন তাহার বয়স সবে দুই—সে জ্ঞানহীনা বালিকা মাত্র। পিতার সম্বন্ধে তাহার কোন ধারণা থাকিলে তাহা অতীব ক্ষীণ, অস্পষ্ট হইবারই কথা। এরূপ অপরিচিত-তুল্য পিতার কাছে শিশু-কন্যার পদে পদে একটা সসঙ্কোচ ভয়ের বাধা স্বভাবতঃই উপস্থিত হইয়া থাকে। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, গুলের সেরূপ কিছুই হয় নাই। দর্শনমাত্র কন্যা পিতৃচরণে লুটাইয়া পড়িল। সন্তানবৎসল পিতা, পরমস্নেহে তাহাকে বক্ষে ধারণ করিয়া প্রশ্নের পর প্রশ্নে অস্থির করিয়া তুলিলেন। গুল্‌বদন্ স্বরচিত ‘হুমায়ূন্-নামায়’ লিখিয়াছেন,—