পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১০০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যশোহর-খুলনার ইতিহাস بار با (৪) গাজীর গীত ও মাণিকপীরেব ছড়।-যিনি পৌত্তলিকতার বিনাশ করিয়া ইসলাম-ধৰ্ম্ম প্রচার করেন তিনিই গাজী। সুন্দর বনে বাঘ মারিলেও গাজী উপাধি হয়, কিন্তু তাহ নকল মাত্র । পাঠান আমলে ধৰ্ম্মপ্রচারের জন্য বহু সংখ্যক গাজী এদেশে আসেন এবং তাহাদের সহিত হিন্দুদিগের বিবাদস্বত্রে বহু সত্য মিথ্য গল্প গুজব পুঞ্জীভূত হইয়া রহিয়াছে। সুদীর্ঘ “গাজীর পটে” এই সকল ঘটনার চিত্র দেখান হইত এবং সুদীর্ঘ “ গাজীর গীতালাপে ” উহার কথা রঞ্জিত ভাষায় লোকসমাজে বিবৃত হইত। গাজীর আগমন ও আক্রমণের বিশেষ বৃত্তান্ত প্রথম খণ্ডে দিয়াছি (১ম, ৩৭৬-৯৯ পৃ: )। কিছুকাল পরে গাজীর অত্যাচারের কথা স্থিত হইয় লোকে উহাদের অদ্ভুত শক্তির (বুজুরী) কথা আলোচনা করিত এবং হিন্দুমুসলমানে অভেদে গাজীর সিরূণি দ্বিত ও গাজীর গীতের দুই এক পাল মানসা করিত। মুসলমান ও নমশুঞ্জের গাজীর গীতের দল করিয়া নানা স্থানে গান গাহিয়া বেড়াইত। একজন মূল গাইন (গায়ক ), কয়েকটি নৃত্যতৎপর মুকণ্ঠ বালক, বেহালাদার ও মৃদঙ্গবাদক গাজীর দলে থাকে। মূল গাইনকে “ খেড়ো” বলে ; তিনি চাপ কান গায়ে, মাথায় লম্বা চুল ও গলায় পুথির মালা ঝুলাইয়া, হাতে কালে চামর চুলাইয়া গাজী কালুর কথাপ্রসঙ্গে কীৰ্ত্তনের পদাবলীর মত একঘেয়ে মুরে, প্রায়শঃ টুংরি তালে, গান গাহিতেন । বিষয় ছিল, গাজীর চরিত্র বা অন্ত কেচ্ছ এবং কল্পিত বাদশাহ বা ওমরাহের কাহিনী। গাজীর গীতের যে কত “ কারিকর ” ( কারুকর ) বা রচয়িত হইয়াছে, তাহার সংখ্যা নাই মাগুরার অন্তর্গত ধনেশ্বরগাতির জয়চাদ মুণ্ডল নামক একজন নমপুত্র প্রসিদ্ধ " গাইন” ছিলেন, তিনি আবার তালখড়ির নিকটবৰ্ত্তী উজগ্রামের তরিবুল কারিকরের শিষ্য। তারবুলার পুত্ৰ হাচিম বিশ্বাস বিখ্যাত ওস্তাদ । জরুর্চাদ গাজার গীতের অনেক সংস্কার করেন । তিনি হিন্দুমুসলমানের ভেদ বুদ্ধি রহিত করিবার চেষ্টা করিতেন। ১৩০৭ সালে ৭২ রংসর বয়সে তাহার মৃত্যু হইয়াছে, তৎপুত্র প্রসন্ন বিশ্বাস গানের দল চালাইতেছেন। - মুসলমানদিগের অন্ত একজন পীরের নাম মাণিক পীর ; তিনি গোরু বাছুর সুন্থ রাখেন, ক্ষেত্রকে শস্তপূর্ণ ও গৃহস্থালী শান্তিপূর্ণ করেন। এদেশীয় হিন্দুমুসলমান উভয়ে, অন্ততঃ গোরুর-কল্যাণ কামনায়, উছার সিরণি দেয় এবং পীরের