পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>>8 যশোহর-খুলনার ইতিহাস জীবজন্তু মারিতেন, কুমীর শূকর গুলিবিদ্ধ করিতেন, হরিণ শিকার করিয়৷ শুপীকৃত করিতেন, আর মারিতেন অসংখ্য প্রকারের অসংখ্য পাখী। উড়ীয়মান পক্ষী ও তাহার লক্ষ্যভ্রষ্ট হইত না। উডউয়মান পক্ষী শিকারে লক্ষ্যের উত্তম পরীক্ষা হয় ; এজন্ত এখনও শিকারি মাত্রই এই শিকারে আমোদ পায়। প্রতাপ ইহাতে অপূৰ্ব্ব আমোদ পাইতেন। একদিন তৎকর্তৃক শরবিদ্ধ এক পাখী ঘুরিতে ঘুরিতে বৃদ্ধ নৃপতি বিক্রমাদিত্যের সম্মুখে পড়িল। পক্ষীর তীব্র যাতনা ও অনর্থক হত্যা দেখিয় তাহার মনে বড় কষ্ট হইল ; বিশেষত: শিকারের ক্ষেত্র বনে জঙ্গলে অন্তত্র আছে, রাজপুরীর মধ্যে নিরীহ পক্ষীর হত্যায় শিকারেব পৌরুষ অপেক্ষ নির্দয়তারই অধিক পরিচয় পায়। প্রতাপের ঔদ্ধত্য ও সঙ্গে সঙ্গে তাহার কোষ্ট্রর ফল মনে পড়িল । তিনি প্রতাপের উপর অত্যন্ত বিরক্ত হক্টলেন এইরূপ ভাবে দিনে দিনে প্রতাপের এমন কত অত্যাচারের কথা বৃদ্ধ রাজার কর্ণগত হইত। ক্রমে তাহার বিরক্তির মাত্রা এত বাড়িল যে, শুনা যায়, তিনি পুত্রের বিনাশের কল্পনাও করিয়াছিলেন। বসন্তরায় তাহাকে বুঝাইয়া নিরস্ত করিতেন । স্বৰ্য্যকান্ত ও শঙ্কর নামে প্রতাপের দুইজন ভক্ত অনুচর জুটিয়াছিল। বঙ্গজ গুহ বংশীয় স্বৰ্য্যকান্ত পূৰ্ব্বাঞ্চল হইতে আসেন এবং ব্রাহ্মণ বংশীয় শঙ্কর চক্ৰবৰ্ত্ত বর্তমান বারাসাত হইতে আসেন। তিনজনে প্রাণে প্রাণে অত্যন্ত অনুরক্ত হইয়াছিলেন। তাহাদের বীরত্ব, উদারতা ও অসমসাহসিকতার কথা সমগ্র যশোরে বিস্তৃত হইল। রাজপুরীর কক্ষে, যমুনার উন্মুক্ততীরে ও সুন্দর বনের অরণ্যানীর মধ্যে বসিয়া যখন তখন তিনজনে যে বিরাটকল্পনা আঁটিতেন, তাহারই ফলে উত্তরকালে আগ্রার সিংহাসন পৰ্য্যন্ত টলিয়াছিল। প্রতাপ কখনও বন্ধুদ্বয়ের সঙ্গ ছাড়া হইতেন না। তিনি যে কোন অত্যাচারের নায়ক হইতেন, তাহার সঙ্গী থাকিতেন এই দুইজন। বিক্রমাদিত্য ও বসন্তরায় প্রতাপকে লইয়া বড় বিপদে পড়িলেন। অবশেষে উভয়ে পরামর্শ স্থির করিলেন যে বিবাহ দিলে প্রতাপের মতির পরিবর্তন হইতে পারে এবং তাহা হইলে সঙ্গীদিগের সহিত মন্ত্রণা করিয়া কালক্ষেপ করিবে না ; এজন্ত তাহারা উভয়ে উদ্যোগী হইয়া প্রতাপের বিবাহ দিলেন। ঘটক কারিকায় প্রতাপের তিন বিবাহের উল্লেখ আছে। সৰ্ব্ব প্রথমে পরমকুলীন জগদানন