পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>え8 যশোহর-খুলনার ইতিহাস ঐ ঘটনার কয়েক বৎসর পরে মানসিংহ আসিয়া কচুরায়কে রাজা করিয়া যান। যাহা হউক, সে কথার বিশেষ আলোচনা পরে করিব। এখন গোবিন্দ রায়ের কথা বলিতেছি ; তাহার সহিত প্রতাপের সদ্ভাব ছিল না, বরং জ্ঞাতি-বিরোধই ছিল । চাদরায়কে প্রতাপ ভাল বাসিতেন ও বিশ্বাস করিতেন ; কিন্তু গোবিন্দের প্রতি তিনি অত্যন্ত বিরক্ত ছিলেন। গোবিন্দ অতিরিক্ত ঈৰ্ষাপরবশ এবং অল্পবুদ্ধি ছিলেন। প্রতাপ ও র্তাহার সঙ্গিগণ সৰ্ব্বদা তাহার প্রতি বিদ্রুপ ও কটুক্তি প্রয়োগ করিতেন। গোবিদরায় অবিরত প্রতাপের বিরুদ্ধে নানা কথা মাতার নিকট জানাইতেন এবং পরে তাহার ঈর্ষ-প্রণোদিত বর্ণনায় উই৷ বসন্তরায়ের কর্ণগোচর হইত। তিনি শুনিতেন, বুঝিতেন, কিন্তু সহজে বিচলিত হইতেন না। হয়তঃ নিৰ্ব্বোধ পরিবারবর্গকে তিনি কোন কথা বলিলে, তাহ অতিরঞ্জিত হইয় প্রতাপের কর্ণে পৌছিত। গ্রতাপ একে খুন্নতাতের প্রতি সন্দিগ্ধ, তাহাতে পরের মুথে নানা কথা শুনিয়া উদ্রিক্ত হইয় পড়িতেন। বসন্ত রায় প্রতাপের ঔদ্ধত্যে মনে মনে যে বিরক্ত ছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই ; তবে তিনি বয়সে প্রবীণ এবং উদার-হৃদয় ; সুতরাং সব দিকে সামঞ্জস্ত করিয়া হৃদয়ের গুণে সকলকে সস্তুষ্ট রাখিয়া চলিতেন। কিন্তু অসদ্ভাব ক্রমেই একটু গুরুতর হইয়া দাড়াইতেছিল। ইহা আর কেহ না বুঝেন, বৃদ্ধ নৃপতি বিক্রমাদিত্য বুঝিয়াছিলেন। তিনি অনেক ভাবিয়া চিন্তিয় স্থির করিলেন, উভয় পরিবারের সদ্ভাব কখনও থাকিবে না । সুতরাং উহার জীবদ্দশায় সমস্ত গোলযোগ মীমাংসা করিবার উপায় উদ্ভাবন করিলেন। তিনি রাজ্যকে দুইভাগে বিভক্ত করিয়া, উহার ॥y০ দশআনা অংশ প্রতাপকে এবং v• ছয়আন অংশ কনিষ্ঠভ্রাত বসন্তরায়কে দিলেন । ভ্রাতৃভক্ত বসন্তরায় ইহাতে কিছুমাত্র আপত্তি করিলেন না। রাজ্যের রাজা বিক্ৰমাদিত্য হইলেও, উহার সংস্থাপক ও ব্যবস্থাপক তিনিই ছিলেন ; তাহার পক্ষে তুল্যাংশ দাবি করা অসঙ্গত হইত না এবং সেরূপ দাবি করিবার জন্য তিনি পুত্রদিগের দ্বার বিশেষভাবে প্ররোচিতও হইয়াছিলেন। কিন্তু তাহা করিলে পাছে প্রতাপের বিরক্তি এবং সঙ্গে সঙ্গে অশান্তির স্বষ্টি হয়, এজন্য তিনি জ্যেষ্ঠের কথায় সম্পূর্ণ সন্মতি দিলেন। তখন বিক্রমাদিত্য রাজ্যটিকে চিহ্নিত মত ভাগ করিয়া দিলেন । কালিঙ্গীর পূর্বপারে ভাগীরথী পর্যন্ত পশ্চিমাংশ পাইলেন বসন্তরায় ; উহা এক্ষণে