পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8.శి যশোহর-খুলনার ইতিহাস পরিবর্তনের সময় ভিন্ন অন্ত সময়ে দেখিতে পান না। এ সম্বন্ধে বিশ্বস্তসূত্রে যে বিবরণ পাইয়াছি, তাহা হইতে উদ্ধৃত করিতেছি – “শ্ৰীশ্ৰীyমাত যশোরেশ্বরী দেবীর শ্ৰীমূৰ্ত্তি কেবল প্রস্তরময় মুখমণ্ডল মাত্র জানিবেন। কণ্ঠের নিম্নাংশে হস্তপদাদি আর কিছুই নাই। একটি প্রস্তরময় প্রায় সমচতুষ্কোণ বেদীর উপর এই কৃষ্ণপ্রস্তরের নির্মিত মুখমণ্ডলটি দৃঢ়ৰূপে বসান ; ঠিক যেন জগজ্জননীরূপে বসিয়া রহিয়াছেন বলিয়া সাধারণের ভ্রম হয়। প্রথমতঃ ঐ সমচতুষ্কোণ উৎকৃষ্ট প্রস্তর নিৰ্ম্মিত বেদিটি প্রায় এক হস্ত পর্যন্ত চতুর্দিকে উচ্চ হইয়া তথা হইতে ক্রমশঃ সরু হইয়া কণ্ঠদেশে গিয়া মিশিয়াছে। কিন্তু এই দৃঢ় প্রস্তরাবরণের মধ্যে যে কণ্ঠের নিম্নভাগ কি প্রকার, তাহ দেখিবার বা জানিবার কোনও উপায় নাই ; ঐ প্রস্তরাবরণ অতিশয় দৃঢ়ৰূপে বেমালুম জোড়, তাহ খোলা বা ভাঙ্গ সম্পূর্ণ অসাধ্য ! দেখিলে অনুমান হয় যে, মুখমণ্ডল আকারে যেরূপ বড় সেই অনুযায়ী যদি শ্ৰী৮দেহ ও হস্তপদাদি থাকে, তবে তাহ এত অনুচ্চ হটতেই পারে না। সুতরাং নিশ্চয়ই মৃত্তিক মধ্যে ( যদি হস্তপদাদি থাকে ) কতকাংশ প্রোথিত আছে। yমায়ের পশ্চিমবাহিনী হওয়া, হয় কবি কল্পন, আর না হয় প্রথমে দক্ষিণবাহিনী ছিলেন, পরে মানসিংহের যুদ্ধ জয়ের পর হয়তঃ ঐ মূৰ্ত্তি উঠাইয়া লওয়ার চেষ্টা করায় হস্তপদাদির কোন হানি হইতে পারে, এজন্য কিংবা সেবাইতগণের বিনয়ামুরোধে লইয়া যাওয়া আর আবশ্বক মনে করেন নাই, তৎপরে কণ্ঠের নিম্নাংশ ঐ কঠিন প্রস্তরাবরণে চিরকালের মত আচ্ছাদিত করিয়া প্রতাপাদিত্যের প্রতি বিমুখী হওয়ার চিহ্নস্বরূপ পশ্চিমবাহিনী করিয়া বসান হইয়াছিল।” আমরাও পূৰ্ব্বে বলিয়াছি মায়ের পশ্চিমবাহিনী হওয়া কবিকল্পনা মাত্র। এমন কি বিমুখী হওয়ার কথাটাই প্রতাপের ইতিহাসের অন্তভূক্ত নহে। মানসিংহ এতবড় বিরাট প্রস্তরমূৰ্ত্তি লইয়। যাইবার কল্পনা করিয়াছিলেন বলিয়া মনে হয় না। মায়ের মূৰ্ত্তি পূৰ্ব্বে কেমন ছিল বা কোন পরিবর্তন হইয়াছে কিনা, কেহই তাহার সাক্ষ্য দিতে পারেন না। আমার বোধ হয়, মা যেমন ছিলেন, তেমনি আছেন। অনেক স্থানেই পীঠমূৰ্ত্তির মুখমণ্ডল বা দেহাংশবিশেষমাত্র সম্বল থাকে। যশোহরেও তাছাই। মায়ের ভয়ঙ্করী মূৰ্ত্তির অন্তরালে করুণাময়ীর প্রতিভা প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে।