পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতাপাদিত্যের রাজধানী Ꮌ8Ꮍ না ; তবে সমুদ্রপথে হিজলীর দিক হইতে কোন শক্ৰ আসিয়া রাজ্যাক্রমণ করিতে না পারে, এজন্য প্রতাপাদিত্যের সময়ে এখানে একটি প্রধান নৌবাহিনীর আড্ডা ছিল। সেইজন্ত বন্দর বা নৌসেনার নিবাসগুলি যাহা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, তাহ কতক ভগ্ন হইয়া সমুদ্রগর্ভে এবং কতক ভীষণ প্লাবনে বিনষ্ট হইয়া গিয়াছে। নিখিল রাবুও এ কথা স্বীকার করিতে গিয়া লিখিয়াছেন —“প্রতাপাদিত্য ইহাকে নৌ-বাহিনীর প্রধান স্থান করিয়াছিলেন বলিয়, ইহা তাহার রাজধানী যশোর অপেক্ষা ইউরোপীয়দিগের নিকট সুপরিচিত ছিল।” আর এই রাজধানী যশোর বলিতে ধূমঘাটের নূতন রাজধানী বুঝিলে সকল গোলমাল চুকিয়া যাইত এবং অনেককে গতানুগতিকের মত ভুল ধারণা পোষণ করিতে হইত না । ৫ (৪) এক্ষণে আমরা চতুর্থ মতের বিচার করিব। কেহ কেহ বলেন, বিক্রমাদিত্যের রাজধানী তেরকাটি বা তিওরকাটি জঙ্গলে ছিল। এই স্থান এখন স্বন্দরবনের ১৬৯ নং লাটের অন্তর্গত এবং ঈশ্বরীপুর হইতে ৭৮ মাইল পূৰ্ব্বদক্ষিণে অবস্থিত। তেরকাটি গবর্ণমেণ্টের খাস জঙ্গল ( Reserve Forest ) ; উচ্ছা এখন বেশ উচ্চ ভূমি ; এজন্য শীঘ্র আবাদী বন্দোবস্ত হইবার কথা চলিতেছে। ইহ যে এক সময়ে মনুষের আবাসভূমি ছিল, তাহ অনেকে জানিত ; এজন্ত ইহার পত্তন ও অধিবাসী সম্বন্ধে নানা জল্পনা চলিয়াছে। তবে ইহা যে বিক্রমীদিত্যের রাজধানী ছিল না, তাহাই আমাদের বিশ্বাস । এ বিশ্বাসের প্রথম কারণ এই- গৌড় হইতে গঙ্গাপথে আসিতে গেলে যমুনা দিয়া হাসনাবাদ অঞ্চলে আসাষ্ট সহজ ; এবং সেখানে বসন্তরায়ের পত্তন স্থান এখনও বসন্তপুর নামে খ্যাত । তেরকাটিতে আসিবার বেলায় ভৈরব-কপোতাক্ষীর পথে বহু ঘুরিয়া আসিতে হয়, এবং ততদূর না আসিয়াও আবাদী অঞ্চলে প্রথম পত্তন হইতে পারিত। যমুনা ঘুরিয়া তেরকাটি যাইতে হইলে, ধূমঘাট ছাড়িয়া তথায় যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। দ্বিতীয় কারণ, তেরকাটিতে দুর্গ বা রাজধানী কোন চিহ্ন নাই। আমরা তিনদিক হইতে তেলকাটির মধ্যে প্রবেশ করিয়া দেখিয়াছি। পূৰ্ব্বদিকে চুনার নদী হইতে তেরকাটির খালে প্রবেশ করিয়া ৭৮টি আইট্র বা পুরাতন বাটীর চিহ্ন এবং বহু গ্রাম্য বৃক্ষলতা দেখিয়াছিলাম। পরে নৈহাটির খাল ও নৈহাটির দেয়ানিয়া দিয়া প্রবেশ করিয়া নানা মনুষ্ঠাবাসের নিদর্শন, ইষ্টক, পুষ্করিণী এবং

  • “A History of India Shipping” by Radha Kumud Mukherjee P. 216.

$