পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বসন্ত রায়ের হত্য। ২৬৯ পুল্লতাতকে হত্যা করিবার জন্ত কৃতসংকল্প হইলেন। গুপ্তভাবে সুযোগ অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। পঞ্চমতঃ এমন সময়ে একদা বসন্ত রায়ের পিতৃশ্ৰাদ্ধ তিথি উপস্থিত হইল। সন্ত্রীক ধৰ্ম্মাচরণ করিতে হয়, গোড়া হিন্দু বসন্ত রায় তাহ মানিতেন। জ্যেষ্ঠা পত্নীই প্রকৃত ধৰ্ম্মপত্নী ; সে পত্নী প্রতাপের নিকট ধূমঘাট দুর্গেই অবস্থান করিতেন। বসন্ত রায় প্রত্যেক যাগযজ্ঞ বা শ্ৰাদ্ধাদিতে জ্যেষ্ঠ পত্নীকে নিজ বাটতে লইয়া কৰ্ত্তব্য সম্পাদন করিতেন। কিন্তু এবার উভয় পক্ষে এমন মনোমালিন্ত চলিয়াছিল যে, গোবিন্দ রায়ের মাতার চক্রান্তে বসন্ত রায় জ্যেষ্ঠা পত্নীকে আনিলেন না বা নিমন্ত্রণ করিলেন না। কেবল মাএ প্রতাপাদিত্যকেই নিমন্ত্রণ করা হইল। ইহাতে সেই জ্যেষ্ঠ পত্নী বা যশোহরের মহারাণী অত্যন্ত অপমানিত বোধ করিলেন। সপত্নী-বিদ্বেষ এই ঘটনার মূল কারণ মনে করিয়া, তিনি চক্ষুর জলে ভাসিতে ভাসিতে দুঃখের কথা প্রতাপাদিত্যকে জানাইলেন। প্রতাপ একে খুল্লতাতের প্রতি অত্যন্ত বিরক্ত, তাহাতে মাতার এই অবমাননা কিছুতে সহ করিতে পারিলেন না। প্রতিশোধ লইবার জন্ত অঙ্গীকার করিয়া, নিমন্ত্রণ রক্ষার জন্ত যাত্রা করিলেন। কলহ পূৰ্ব্ব হইতে চলিতেছিল ; সুতরাং এবার প্রতাপ নিরীহ ভ্রাতুপুত্রের মত নিমন্ত্রণ রক্ষা করিতে সাহসী হইলেন না । তিনি নিজে সম্পূর্ণ যোদ্ধ বেশে এবং বাছা বাছ কতকগুলি সশস্ত্র শরীররক্ষী দ্বারা পরিবৃত হইয়া শ্ৰাদ্ধদিনে রায়গড় দুর্গে প্রবেশ করিলেন । পূর্বেই বলিয়াছি তাহার পান-দোষ ছিল, এ সময় তিনি অতিরিক্ত মদ্যপানে রক্তচক্ষু হইয়া উপস্থিত হইলেন। প্রলয়ের আকাশ পূৰ্ব্ব হইতেই প্রস্তুত হইয় রছিল। সেই অবস্থায় যখন প্রতাপাদিত্য প্রবেশ করিলেন, তখন গোবিন্দ রায়ের আশঙ্কা হইল ; সে আশঙ্কা অমূলক বলা যায় না। তিনি ভাবিলেন, প্রতাপ বুঝি উহাদিগকে নিহত করিবার জন্যই সশস্ত্র হইয়া প্রবেশ করিতেছেন । বসন্ত রায়ের মিষ্ট সমেহ ব্যবহারে অনেকবার প্রতাপের রৌদ্রমূৰ্ত্তি শাস্ত হইয়াছে, হয়তঃ এবারও সেরূপ হইত। কিন্তু বসন্তের সহিত র্তাহার সাক্ষাতের পূর্বেই গোবিন্দ রায় ছশ্বুদ্ধিত বশতঃ এক অত্যহিত উপস্থিত করিলেন। কোন কথাবাৰ্ত্ত হইবার পূরেই তিনি দোতলার বাবালা হইতে প্রতাপাদিত্যকে লক্ষ্য করিয়া দুইবার তীর নিক্ষেপ করিলেন । তীর ঠিকমত লাগিলে প্রতাপের রক্ষা ছিল না। কিন্তু