পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԳՆ যশোহর-খুলনার ইতিহাস সম্বৰ্দ্ধিত করিয়া দিয়াছেন। গল্পটি এই—প্রতাপাদিত্য বসন্তের পুত্রগণকে বন্দী করিয়া নিজ রাজধানীতে আনেন ; রূপবন্ধ সেই সংবাদ ঈশাখার নিকট দিলে, তাহার সেনাপতি বলবন্ত পুত্ৰগণের উদ্ধার সাধনের জন্ত ধূমঘাটে আসেন। প্রতাপের সহিত নিভৃতে গুপ্ত মন্ত্রণা করিবার ছলে বলবন্ত নির্জন গৃহে নিরস্ত্র প্রতাপকে হঠাৎ আক্রমণ করেন। বলবন্ত প্রকৃতই বলশালী, তিনি বসন্তের পুত্ৰগণের জীবন দান করিবার অঙ্গীকারে প্রতাপকে ছাড়িয়া দেন। প্রতাপ সত্য পালন করিয়াছিলেন । এ গল্প আমরা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করি না, বলবস্তের উল্লেখও কোথায় পাওয়া যায় না। তবে এই ঘটনায় বলবস্তের বল পরীক্ষা অপেক্ষ মহারাজ প্রতাপাদিত্যের সত্যবাদিত অধিক পরীক্ষিত হইয়াছিল, ইহাই আনন্দের বিষয় । যাহা হউক, বসন্ত রায়ের সব পুত্রই যে প্রতাপের হস্তচু্যত হইয়াছিলেন, তাহা নহে। শুনা যায়, তাহার কয়েক পুত্র মাতুলালয়ে ছিলেন এবং চন্দ্ররায় প্রভৃতি প্রতাপের অনুগ্রহ-ভাজন হইয়া উচ্চ রাজকাৰ্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। কেবল মাত্র কচুরায়ই দেখিতে পাই, প্রথমতঃ হিজলীতে ও পরে আগ্রাতে উপনীত হন। বলবস্তের দেীতোর ফলেই হউক, অথবা রূপবসুর প্ররোচনায় পাঠানের শক্তি সংগ্ৰহ করিতেছে এই সংবাদ শুনিয়াই হউক, প্রতাপাদিত ঈশাখার রাজ্য আক্রমণ করিয়া তাহাকে কিছু শিক্ষা দিবার জন্ত উদ্যোগী হইলেন। হিজলীর নব প্রতিষ্ঠিত পাঠান রাজ্য বসন্তরায়ের রাজ্যাংশের ঠিক অপর পারে। এ সময়ে পাঠানদিগকে পযুদস্ত করিতে না পারিলে, তাহার যে মুযোগ বুঝিয়া পশ্চিমভাগ আক্রমণ করিবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। একটু স্বপদে দাড়াইতে গেলেই চারিদিক হইতে কিরূপ শক্ৰ-বৃদ্ধি হয়, প্রতাপ তাহা বুঝিতে লাগিলেন। শুধু পাঠান শত্রু নহে, এই সময়ে মগ ও পৰ্টুগীজ প্রভৃতি দম্বারাও ভাগীরথী, সরস্বতী ও রূপনারায়ণ প্রভৃতি নদী-পথে দেশের মধ্যে প্রবেশ করিয়া অত্যাচার করিতেছিল ; তাহাদিগকে দমন করিবার জন্ত ভাগীরথীর মোহানায় সমুদ্র-কুলে অর্থাৎ সাগর দ্বীপে একটি প্রধান সৈন্তাবাস স্থাপন করা প্রয়োজনীয়, ইহাও বুঝিতে বাকী রহিল না। এই সাগর-দ্বীপের পরপারে হিজলী রাজ্য ; মোগল কর্তৃক উড়িষ্যা বিজয়ের পর, অল্পদিন হইল পাঠানগণ তথায় আসিয়া দলবদ্ধ হইতেছিল। সুতরাং এই হিজলী রাজ্য করতলগত করিতে না পারিলে,