পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামচন্দ্রের বিবাহ ৩১৯ অনেক সহৃদয় লেখক প্রতাপের চরিত্র সম্বন্ধীয় এই নারকীয় প্রবাদ সত্য বলিয়া ধরিতে পারেন নাই। রোহিণী বাবু লিখিয়া গিয়াছেন “বাস্তবিক পক্ষে প্রতাপের ন্তায় চরিত্রে এই সকল কথা কতদূর সত্য জানি না। শত্রপক্ষ হইতে প্রতাপের সম্মান খৰ্ব্ব করিবার জন্ত হয়ত মিথ্যা রটন মাত্র। র্তাহার এই লোকাতীত প্রতিভ, অসাধারণ বাহুবল, দিজুগুল বিঘোষিত শুভ্র যশোরাশি অবলোকন করিয়া ঈৰ্ষাপরবশ শত্ৰগণ, আত্মীয়-বিচ্ছেদ মানসে প্রতাপের নামে অনর্থক এই প্রবাদের স্বষ্টি করিয়া তাহার শুভ্র যশোরাশিতে কালিমা ঢালিতে চেষ্ট করিয়াছিল।”* শুধু এই একজন লেখক নহেন, বহুজনে মনে করেন, বসন্তরায় ও তাহার পুত্ৰগণের ষড়যন্ত্রে প্রতাপের সহিত তাঙ্গর জামাতার বিবাদ স্বষ্টি করিবার জন্য, রামাই ভাড়কে প্ররোচিত করিয়া এই ঘটনা সংঘটিত হয়। কিন্তু ঘটনার এই কারণ আমরা মানিয়া লইতে পারি না। আমরা পূৰ্ব্বেই দেখাইয়াছি, ইহার ৭৮ বৎসর পূৰ্ব্বে বসন্ত রায় ও তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্র গোবিন্দ রায় প্রতাপ হন্তে নিহত হন। কচু রায় এ সময় আগ্রী বা বাজমহলে ছিলেন ; চাঁদ রায় প্রভৃতি বসন্তের অন্ত পুত্ৰগণ কোথায় কি ভাবে ছিলেন, ঠিক জানা যায় না। যেখানেই থাকুন, তাহাদের কোন ষড়যন্ত্র করিবার সাহস বা সুযোগ ছিল বলিয়া মনে হয় না। যাহা হউক, রামচন্দ্র নিরাপদে মাধবপাশায় পৌঁছিয়া শ্বশুর বা পত্নীর সহিত সকল সম্বন্ধ রচিত করিলেন ; তিনি উহাদের নাম পৰ্য্যন্ত শুনিতে পারিতেন না। শ্বশুরের প্রতি র্তাহার ক্রোধের কারণ ছিল ; কিন্তু যে বালিকা স্ত্রী একান্তু পতিব্ৰতার মত হয়ত পিতার বিরাগভাজন হইয়াও, স্বামীর জীবন রক্ষার হেতু হইয়াছিলেন, তাঙ্গার প্রতি বিরূপ হওয়া রামচন্দ্রের পক্ষে অৰ্ব্বাচীনতার পরিচায়ক ভিন্ন কিছু নহে। রামচন্দ্রের সে বার যশোহর-যাত্রাষ্ট কেমন অমঙ্গলসূচক ছিল। তিনি ভবিয়াছিলেন মাধবপাশায় পৌছিলে নিরুদ্বেগ হইবেন, কিন্তু বিধির চক্রে নূতন বিপদ স্তাগর জন্ত অপেক্ষা করিতেছিল। তাঙ্গর অনুপস্থিতি কালে আরাকাণের রাজা হঠাৎ বাকুলা আক্রমণ করিয়া কতকগুলি স্থান অধিকার করিয়া লইয়াছিলেন। ডু জারিকের বিবরণী হইতে আমরা জানিতে পারি, আরাকাণ-রাজ পটুগীজদিগের হস্ত হইতে সন্দ্বীপ অধিকার করিয়া গৰ্ব্বে আত্মহারা হইয়াছিলেন ; এক্ষণে বঙ্গের অন্তান্ত সকল রাজ্য দখল করিয়া লইবার বাক্ল, ১৭৩ পৃ: ।