পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిన• যশোহর-খুলনার ইতিহাস প্রতাপাদিত্য ঢাকায় যাওয়ার পর বাদশাহী সৈন্তগণ যশোহরের উপকণ্ঠে যেখানে সেখানে পড়িয়া সময় সময় প্রজাদের ঘরবাড়ী লুণ্ঠপট ও সৰ্ব্বনাশ সাধন করিত। ভয়ে প্রজাবৰ্গ দেশ ছাড়িয়া যে যেখানে পারিল পলাইতেছিল । উদয়াদিত্য বড় বিপদে পড়িলেন । পিতার প্রত্যাগমন পৰ্য্যন্ত কোন প্রকারে মোগল সৈন্যদলকে নিরস্ত ও শাস্ত করিয়া রাখিবার জন্য তিনি সৰ্ব্বদা চেষ্টা করিতেন। এমন কি, এজন্য তিনি অৰ্থদিয়া দুৰ্ব্বত্ত সেনানী দিগকে সন্তুষ্ট রাখিবার প্রয়াস পাইয়াছিলেন। এই সময়ে, মোগল পক্ষীয় জনৈক সেসানী, মীর্জ মকীর সহিত যুবরাজের সদ্ভাব স্থাপিত হইয়াছিল। তাহাতে মীর্জা সহন ঈর্ষানলে জলিয়া উঠিলেন । যাহা করিলেন, তাহার বর্ণনা বহারিস্তানের অনুবাদ হইতে দিতেছি —“সেই সময়ে উদয়াদিত্যের দূতগণ সন্ধি করিবার জন্ত মীর্জ সন্থনের নিকট যাতাযাত করিত। একদিন মীর্জা সহন তাহাদিগকে বলিলেন, ‘তোমরা মীর্জা মকীকে থলিয়া খলিয়া টাকা মোহর এবং রত্ন ও বহুমূল্য দ্রব্য উপহার দিতেছ, আর আমাকে আম ও কাঠালের ডালি নিয়া পুছ না ! আমি কি কেহ নই ? তোমাদের দেখাইতেছি আমি কে।’ সেই দিন দুপুর রাতে মীজা সহন নিজ সৈন্ত লইয়া বাহির হইলেন এবং আশপাশের গ্রাম গুলিতে এরূপ লুঠ এবং স্ত্রীলোক দিগের উপর অত্যাচার করিলেন যে যশোহর আক্রমণের প্রথম হইতে এ পর্য্যন্ত ইহার সমান কিছুই হয় নাই।” [ বহারিস্তান, ৫৭ ক পৃষ্ঠার অনুবাদ ] ইহা মীজ সহনের নিজের লেখা। এইভাবে নিরীহ প্রজার উপর, বিশেষতঃ স্ত্রীলোকের উপর যিনি বিনা কারণে পাশবিক অত্যাচার করিয়া সেই কথা নিজের লেখনীমুখে লোক-সমাজে ব্যক্ত করিতে পারেন, তাহাকে শুধু নৃশংস বলিলে চলে না। তিনি নিজের বাহাদুৰী দেখাইতে গিয়া স্বজাতির মুখে কালিম লেপন করিয়া দিয়াছেন। যাহার ঈর্ষা, দ্বেষ বা ক্রোধ এত অসংযত, তাছার লিখিত বিবরণী ষে পক্ষপাতদুষ্ট হইবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু দুঃখের বিষয়, অন্ত চক্ষুৰ প্রমাণের অভাৰে আমাদিগকে এ অংশে তাহারই উপর নির্ভর করিতে হইতেছে । তবে এমন ক্রোধান্ধ লোকের কলমে প্রতাপাদিত্যের চরিত্র বা নীতির বিরুদ্ধে একটি কথা ও লিখিত হয় নাই। ইহাও প্রতাপচরিত্রের গৌরবের পূর্ণ পরিচয় দিতেছে। - অধ্যাপক সরকার মহাশয় লিখিয়াছেন, মীর্জা সহন প্রজাৰর্গের প্রতি ৰে