পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গে বারভুঞা Sq ভূম্যধিকারী ছিল, তাহারাই আকস্মিক নেতা হইবার সুযোগ পাইল ; ক্রমে আরও বিস্তৃত স্থান দখল করিয়া প্রবল হইয়া দাড়াইল। কেহ বা পূর্কে কিছুই ছিল না ; এখন দৈবযোগে দেহের বলে ভূম্যধিকারী সাজিল। আত্মরক্ষার জন্য ইহাদের সকলকেই সৰ্ব্বদা সতর্ক ও সশস্ত্র থাকিতে হইত। যখন তাহাদের আত্মরক্ষার চেষ্টা কমিত, তখন তাহারা অধিকার বিস্তারে মনোযোগ দিত। সে বিবাদের ফলে অনর্থের উৎপত্তি হইলে, তখনই পুনরায় নিজের গণ্ডীর ভিতর দাড়াইত এবং কূটমন্ত্রণ বা ষড়যন্ত্রের বলে উহার আত্মপ্রতিষ্ঠায় প্রবৃত্ত হইত। এই ভূধিকারগিকে ভূঞা বা ভৌমিক বলিত। পাঠান ও মোগলের সন্ধিযুগে এমন কত ভূঞা যে দেশমধ্যে জাগিয়াছিল, তাহার সংখ্যা নাই। অধিকারের বিস্তৃতি অনুসারে ইহাদের ক্ষমতার নুনাধিক্য বুঝা যাইত । উহাদের কাহারও বা শাসনস্থল একটি পরগণাও নহে, আবার কেহ বা এক খণ্ড-রাজ্যের অধীশ্বর। কোথাও বা দশ বার জন ভূঞা একজনকে প্রধান বলিয়া মানিয়া তাহাৰ বহুত স্বীকার করিত। কখনও বা একজন প্রতাপাতি ভূঞা অন্ত ভুঞার সঙ্গে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হইতেন। তখন রণ-রঙ্গ রাজায় রাজায় না হইয়া ভুঞায় ভূঞায় চলিত, আর প্রজাদিগের সকলকেই সেই যুদ্ধ-ব্যাপারে যোগ দিয়৷ ফলভাগী হইতে হইত। এই অরাজকতার যুগে কেহ নির্লিপ্ত থাকিতে পারিতেন না। সকলকেই রাজনৈতিকতায় যোগ দিতে হইত, নতুবা আত্মপরিবারের প্রাণ রক্ষা পর্যন্ত অসম্ভব হইত। দৈশিক অশান্তির একটা অশুভ ফল আছে বটে, কিন্তু উহাতে যে মানুষকে অনলস ও কৰ্ম্মঠ করিয়া জাতীয় প্রাণের সাড়া দিয়া থাকে, তাহাতে সন্দেহ নাই। ঐ যুগে দেশের মধ্যে শত অশান্তির ভিতর একটা প্রাণের পরিচয় ছিল। জীবদেহে স্নায়ুসন্ধির মত দেশের মধ্যে এই ভূঞাগণ জাতীয় প্রাণের স্পন্দন-কেঞ্জ ছিলেন। আস্কোপান্ত মুসলমান শাসনের উপর দৃষ্টিপাত করিলে আমরা কি দেখিতে পাই! দেখি পশ্চিম বার জে করিয়া বাজানি বৈদেশিক জাতি, ভিন্ন ধৰ্ম্ম ও ভিন্ন আচার ব্যবহার লইয়া, একের পর এক ভারতে প্রবেশ করিয়া আধিপত্য স্থাপন করিতেছে ; দীর্ঘকাল ধরিয়া দেশমধ্যে অত্যাচার, রক্তপাত, অশান্তি, বিদ্রোহ বা বিপ্লব চলিতেছে ; অপেক্ষাকৃত অল্পকাল মাত্র কোন কোন wo