পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

đèo যশোহর-খুলনার ইতিহাস সীতারাম মনোহরের নবার্জিত ইশপপুর পরগণার জন্য রাজস্ব দাবি করিয়াছিলেন। উহা অসন্থ হওয়াতে মনোহরের একবার যুদ্ধ করিবার সাধ হইল। কিন্তু তিনি সীতারামের আয়োজনের পরিমাণ জানিতেন না ; মহম্মদপুরের বড় বড় কামান কিরূপে যুদ্ধের প্রকৃতি বদলাইয়া দিতেছিল, সে জ্ঞান তাহার হয় নাই। তিনি মুরউল্লার ফৌজদারী ফৌজ এবং নিজের লাঠিয়াল সৈন্ত লইয়া ভৈরব পার হইলেন । এই সময়ে সীতারামের অনুপস্থিতি কালে রাজধানীর সকল ভার সুযোগ্য দেওয়ান যদুনাথ মজুমদারের উপর ন্যস্ত ছিল। তিনি মনোহরের গতিবিধির সংবাদ পাইয়া ব্যস্ত হইলেন। মেনাহাতী প্রভৃতি প্রধান সেনাপতি কেহই মহম্মদপুরে ছিলেন না। যছনাথ তাহাদের অপেক্ষা না করিয়া, রাজধানী রক্ষার সুব্যবস্থা করিয়া, নিজে, কয়েকদল সৈন্ত ও কতকগুলি ছোট বড় কামান লইয়া, নবগঙ্গা পার হইয়া কুল্লে-কুচিয়ামোড়ার কাছে উপস্থিত হইলেন। দেখিলেন, তাহার বামদিকে চিত্রানী কিছুদূরে দক্ষিণ মুখে বাকিয়া গিয়াছে এবং ডানদিকে ফটুকী নদী উত্তর বাহিনী হইয়াছিল। উভয় বাকের মধ্যবর্তী স্থান দিয়া অবাধে শত্রু সৈন্ত পধব্রজে নবগঙ্গার কুলে উপনীত হইতে পারিত, কিন্তু সেদিকে তাহাদিগকে অগ্রসর হইতে দিলে, রাজধানীর কোন আশঙ্কা হউক বা না হউক, মামুদ্ৰশাহী পরগণ রক্ষা করা যায় না ; সে দিকেও যে মনোহরের নজর ছিল না, তাহ নহে। এজন্য যদুনাথ চিত্রা ও ফটুকীর উক্ত দুই বাক্ সংযুক্ত করিয়া দিয়া একটি থাল কাটিলেন, উহার নাম হইল “যদুখালি” ; এখন তাহ সুন্দর নদীরূপে পরিণত হইয়াছে। থাল সম্পূর্ণ হইতে না হইতে মনোহর রায় বুনাগাতির দক্ষিণ দিকে এক বিস্তৃত প্রাস্তরের মধ্যে ছাউনি করিয়া বসিলেন, ঐ স্থানকে এখনও স্থানীয় লোকে “গড়ের মাঠ" বলে, কারণ মনোহর রায় সেখানে চারিধারে গড় কাটিয়া মধ্যস্থানে উচ্চ ঢিপির উপর সৈন্তাবাস স্থাপন করিয়াছিলেন। সে গড়ের চিহ্ন এবং ঢিপির কতকাংশ আছে, তবে ভূতের ভয়ে সে উচ্চস্থানে এখনও লোকে বাস করিতে চায় না। সারি সারি কামানের জর চাচড়ার সেনা সৰ্বগুন বা স্বরসেনা গ্রামের উত্তরে অগ্রসর হইল না । স্থানটিকে কে স্বরসেনা (Sursena) নাম দিল, জানি না । چ ছাউনি করিয়া থাকিবার সময়ে যে উভয় সৈন্তের অগ্রবর্তী দলের মধ্যে ছুই একটি ক্ষুদ্র সংঘর্ষ হয় নাই, তাহ বলিতে পারি না। বরং মনে হয়, হইয়াছিল