পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ó為ソ যশোহর-খুলনার ইতিহাস অভাব ছিল, তাঙ্গার কোন রণতরী ছিল না। দ্রুতগমনের জন্য ‘বলিয়া বা সিপ এবং ভারবহনের জন্য পলওয়ার বা পান্‌লী ছিল, কিন্তু যুদ্ধের জন্ত কামানযুক্ত উপযুক্ত কোশ বা অন্তবিধ রণতরী ছিল না । সুতরাং শক্রকে জলপথে মহম্মদপুরে পেছিবার পূৰ্ব্বে বা মধুমতী পার হইবার সময়ে কোন বাধা দিবার স্বব্যবস্থ হয় নাই। দয়ারামের সৈন্ত একটু উত্তরদিক দিয়া এবং বক্সআলির ফৌজ অনেকদূত্র দক্ষিণে গিয়া নদীপার হইল । নবাবের পরওয়ান অনুসারে জমিদারের নৌকা দিয়া সাহায্য করিয়াছিলেন । সকল সৈন্ত পূর্ব ও দক্ষিণ দিক হইতে এক সময়ে মহম্মদপুর আক্রমণ করিল ; কয়দিন ধরিয়া কিভাবে যুদ্ধ চলিয়াছিল, তাহার কোন চাকুষ সাক্ষী নাই। সুতরাং আমি সে যুদ্ধের কোন বিবরণ দিতে পারিতেছি না । পাঠককে তাহ অনুমান করিয়া লইতে হইবে ; কাল্পনিক বর্ণনার জন্ত ঐতিহাসিকের আবগুক নাই । বঙ্কিমচন্দ্র সীতারামের বীরজীবনের শেষ নাটাভিনয়ের অতীব সুন্দর চিত্ৰ দিয়া গিয়াছেন। উছার মধ্যে ভাবিবার কথা আছে । মহম্মদপুরের দুর্গের বাহিরে যে সকল অধিবাসী বা ব্যবসায়ী ছিল, সকলেই পলায়ন করিয়া স্থানত্যাগ করিয়াছিল ; মোগল সৈন্য তাহাদের ঘরবাড়ী শূন্তপুরী অগ্নিমুখে দিতে দিতে দুৰ্গদ্বারে উপনীত হইল। রামসাগরের কূল হইতে দুর্গের পূৰ্ব্বতোরণ পৰ্য্যন্ত ভীষণ যুদ্ধ চলিয়াছিল। সীতারামের গুলি বারুদের বিশেষ আয়োজন থাকিলেও মোগলেরা কামানগুলি একে একে জিতিয়া লইল, সেনানীবৃন্দ একে একে যুদ্ধক্ষেত্রে ধরাশায়ী হইল। তখন সীতারাম স্বল্পাবশিষ্ট সৈন্যদল লইয়া দুৰ্গদ্বার উন্মোচন পূৰ্ব্বক বাহির হন এবং কতকক্ষণ পর্য্যন্ত দুৰ্দ্ধৰ্ষভাবে যুদ্ধ করিবার পর আহত হইয় ধৃত হন। প্রচলিত প্রবাদ হইতে জানা যায়, রাণী দিগের মধ্যে একজন শেষ পর্য্যন্ত দুর্গমধ্যে ছিলেন। সীতারাম ধৃত হইবার পর যখন মোগল সৈন্ত বিজয় দুন্দুভি বাজাইয়া সাগর তরঙ্গের মত দুর্গমধ্যে প্রবেশ করিয়া, লুঠপাট করিতে লাগিল, তখন নাকি দয়ারাম রায় উহাদিগকে দেবমন্দিরও আমার মহলের দিকে যাইতে দেন নাই। তবে তিনি নিজে কৃষ্ণজী বিগ্রহের অপূৰ্ব্ব মূৰ্ত্তি দেখিয়া লোভ সম্বরণ ੇ পারিলেন না। লুণ্ঠনের কোন অংশ ভাগীই তিনি হন নাই, ইহা সত্য কথা ; একমাত্র সুন্দর কৃষ্ণজী বিগ্রহটি তিনি ৰত্নাভ্যন্তরে করিয়া লইয়া প্রস্থান করেন । এখনও দিঘাপাতিয়া রাজবাটীতে এই