পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতাপাদিত্যের ইতিহাসের উপাদান 86. চতুর্থ পরিচ্ছেদ-প্রতাপাদিত্যের ইতিহাসের উপাদাল । আমরা প্রতাপাদিত্যের ইতিহাসের আলোচনা করিব বটে, কিন্তু সে ইতিহাস পাইব কোথায় ? যাহাকে ইতিহাস বলিতে পারি, সে সময়ের এমন কোন বিবরণ দেশীয় হিন্দুতে লিখে নাই ; সমসাময়িক বা পরবর্তী বিখ্যাত মুসলমানী ইতিহাসে প্রতাপাদিত্যের ইতিহাস নাই বলিলেও চলে। আবুল ফজলের বিরাট গ্রন্থে প্রতাপাদিত্যের নাম গন্ধ নাই। অথচ সেই গ্রন্থ এবং নিজামউদ্দীন বা বদাউনীর বিস্তৃত ইতিহাস হইতে জানিতে পারি, মুনেম খাঁ, খাজাহান, টোডরমল্প, বা মানসিংহের মত কত কৃতী মোগল সেনাপতি ২৫ বৎসর ধরিয়া বঙ্গভূমিতে বিদ্রোহ দমন করিলেন। কিন্তু সে বিদ্রোহী কে কে, তাহার পরিচয় নাই। সে সংঘর্ষের ফলে দিল্লী আগ্রার কত ওমরাহ দেশে না ফিরিয়া বঙ্গের কোণে নগণ্য পল্লীপ্রাস্তরে কবরিত হইল, কত বিদ্রোহী যুদ্ধে বা গুপ্ত ঘাতকের হস্তে নিহত হইল, কেহ বা বন্দিভাবে ধৃত বা পিঞ্জরাবদ্ধ হইল, কিন্তু সে বিদ্রোহী কে কে, তাহার সুস্পষ্ট পরিচয় পাওয়া গেল না। ইতিহাসে বিদ্রোহের বার্তা যাহা কিছু আছে, সে কেবল বিদ্রোহী পাঠানের কথা ; কারণ পাঠানের হস্ত হইতেই মোগলেরা বঙ্গের মসনদ কাড়িয়া লইয়া ছিলেন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে যে স্বল্পসংখ্যক পলায়িত পাঠান বিদ্রোহী বিরাট বঙ্গের হিন্দু অধিবাসীর মধ্যে মিশিয়া গিয়াছিল, পাঠানের স্নেহ ও কৃতজ্ঞতার পরিশোধকল্পে যে লক্ষ লক্ষ হিন্দু পাঠানের স্বত্বস্বামিত্বের দাবিতে নিয়ত যুদ্ধ লিপ্ত হইতেছিল, বাঙ্গালার যে অসংখ্য ভুঞারাজগণ পাঠানকে স্বগণ বলিয়া গণ্য করিয়া মোগলের রক্তে তৰ্পণ করিয়াছিলেন, তাহাদের কথা আকবরের বৃত্তিভূক্‌ লেখকগণের গ্রন্থে স্থান পায় নাই। মানসিংহ বিরাট বাহিনী সঙ্গে লইয়৷ বঙ্গে আসিয়াছিলেন, সপ্তদশবর্ষকাল সদৰ্পে বঙ্গে রণরঙ্গে মাতিয়াছিলেন, এবং নিজের যৌবনকে বাৰ্দ্ধক্যে পরিণত করিয়া হৃতস্বাস্থ্য হইয়া স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করিয়াছিলেন ; কিন্তু তিনি কাহার বিরুদ্ধে কিরূপে যুদ্ধ করিলেন, তাহ “আকবরনাম|” তন্ন তন্ন করিলেও খুজিয়া পাওয়া যায় না। ন পাইলেই কি সে সব যুদ্ধের কথা,