পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম পরিচ্ছেদ—সুন্দরবনে মনুষ্যবাস । \ኃፃ পথে আসিয়াছিলেন, তাহা জানা যায় নাই। সম্ভবতঃ র্তাহারা একেবারে বাহিরের নদীপথে আসিতে পারেন। সে পথে তখনও বসতি স্থাপিত হয় নাই। যে পথে তখন সাধারণতঃ পূৰ্ব্ববঙ্গের নৌকা আসিত, সে পথে আসিলে মিশনরীগণ পথে আর কোনও স্থান না দেখুন, খলিফাতাবাদ, পাণিঘাট, চক শ্ৰী, কুড়লতলা প্রভৃতি স্থান দেখিয়া আসিতে পারিতেন। - সুন্দরবনে চিরদিন বসতি হইতে পারে নাই। এক সময় হয়ত সুন্দরবন উঠিয়াছে দুই তিন শত বৎসর পর্যন্ত উহার আবাদ ও বসতি স্থাপন কার্য চলিয়াছে ; পরে হঠাৎ পুনরায় উহা ৰসিয়া গিয়াছে, আবার জঙ্গল জন্সিয়াছে। এই অবস্থার পরিবর্তন হইতে আবার অনেক দিন লাগিয়াছে। কেহ অনুমান করিতে পারেন যে, মিশনরীগণ এইরূপ কোন পতনের যুগে আসিয়াছিলেন। কিন্তু তাহা বিশ্বাস হয় না ; কারণ র্তাহাদের আগমনের অব্যবহিত পূৰ্ব্বে সমস্ত দক্ষিণ বনে যেখানে সেখানে নদীর মোহানায় প্রতাপাদিত্যের কীৰ্ত্তিহম্ম সমূহ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। সাগরদ্বীপে, ধূমঘাটে, বেদকাশী বা চকীতে এবং আরও কত স্থানে প্রতাপাদিত্যের যে দুর্গ ছিল, তাহার বিশেষ বিবরণ পরে প্রদত্ত হইবে। সে সকল দুর্গ ব্যতীত অন্ত নানাবিধ কীৰ্ত্তিচিহ্নও সুন্দরবনের নানা স্থানে নানা ভাবে বর্তমান রহিয়াছে। কোথায়ও ভগ্ন অট্টালিকা, প্রাচীরের ভগ্নাবশেষ, ইষ্টকস্তৃপ, পুকুর বা রাস্তার অংশবিশেষ, পুকুরের বাধা ঘাট, পরিচিত গ্রাম্য বৃক্ষ, মাটর ঢিপি বা ভিট্ট, মনুষ্যব্যবহৃত মৃন্ময় পাত্রাদি বা তাহার ভগ্নাংশ প্রভৃতি নানা স্থানে ভীষণ অরণ্যানীর মধ্যে দর্শকমাত্রকে চমকিত করে। ইষ্টক গৃহ পাইলে ব্যান্ত্রে আশ্রয় লয়, পুকুরের পার্শ্বে শূকর থাকে, উচ্চ ভিট্টার উপর গাব বা জাম গাছের ছায়ায় হরিণে বিশ্রাম লাভ করে ও তাহদের লোভে ব্যাঘ্র আসে এবং ইষ্টকন্তুপে বনের কাল সৰ্পে বাস করে। সুতরাং সাধারণতঃ জলমগ্ন অরণ্যভাগ অপেক্ষ উচ্চ কীৰ্ত্তিস্থান সমূহ অধিকতর বিপজ্জনক । সুন্দরবনের সমস্ত স্থান দেখা এক জীবনের কাজ নহে। বিশেষতঃ দক্ষিণাংশে এমন অনেক স্থান আছে, যাহা মামুষের অগম্য এবং বনবিভাগীয় শাসনের বহির্ভূত। সে সবস্থানে জমি এত নিয়, বন এত নিবিড় এবং পার্শ্ববর্তী নী সমূহ এত বহুবিস্তৃত ও তরঙ্গ সঙ্কুল যে, সে সকল স্থানের পথও অজানিত