পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৮ যশোহর-খুলনার ইতিহাস । বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার উত্তরাংশে স্থতিনামক স্থানের নিকট হইতে পূৰ্ব্বকালে নলিনী বা পদ্মা বহির্গত হয়। অতি প্রাচীনকালে নলিনী সম্ভবতঃ একটু উত্তরমুখে ঘুরিয়া ক্ষীণ-ধারায় প্রবাহিত হইত। তাহার বিশাল বিস্তার ছিল না, তখন রাজসাহী ও পাবনা প্রভৃতি স্থানের সহিত নদীয়া যশোরের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ ছিল। পদ্মার প্রাচীন অবস্থা সম্বন্ধে বহু বিতর্ক রহিয়াছে। এস্থলে তদ্বিষয়ের বিচার করিবার প্রয়োজন নাই। ক্ষু যেস্থান হইতে গঙ্গার প্রধান প্রবাহ ভাগীরথী নামে দক্ষিণদিকে প্রবাহিত ছিল, সেই স্থান হইতেই পদ্ম বাহির হইয়াছিল। কালে ভাগীরথী ও পদ্মার সঙ্গমস্থলে একটি ঘোলা হইয়া ভাগীরথীর একটু বক্রগতি হয়। এখনও সে বক্রগতির পরিচয় আছে। সম্ভবতঃ এইজন্যই গঙ্গার মহাবল প্রবাহ পদ্মার দিকে এক সরল পথের আবিষ্কার করিয়া সোজা পূৰ্ব্বমুখে প্রবাহিত হয়। কৃত্তিবাসী রামায়ণে ও “গঙ্গীভক্তিতরঙ্গিণী” প্রভৃতি গ্রন্থে গল্পের অবতারণাপূৰ্ব্বক বলা হইয়াছে যে গঙ্গাদেবী ভগীরথের পশ্চাতে পশ্চাতে আসিতেছিলেন ; এমন সময়ে ভগীরথ একটু শ্লথগতি হওয়ায় পদ্মমুনি বা শঙ্খামুর গঙ্গাদেবীকে পথ ভুলাইয়৷ পূৰ্ব্বমুখে লইয়া যান। গঙ্গা কিন্তু বুঝিতে পারিয়া যে পথ হইতে ফিরিয়া আসিয়া, ভাগীরথী-খাতে দক্ষিণ-বাহিনী হন। বাস্তবিকই পদ্মার শীর্ণ জলধারা পূৰ্ব্বে বিক্রমপুরের মধ্য দিয়া প্রবাহিত হইয়া মেহদীগঞ্জের নিকট মেঘনায় মিলিত হইত। পরে পদ্মায় গঙ্গার প্রধান প্রবাহ বহিতে থাকিলে, উহা ক্রমে জীবণু আকার ধারণ করিয়া বহুপ্রাচীন কীৰ্ত্তির ধ্বংসসাধন করিয়া “কীৰ্ত্তিনাশা” নাম গ্রহণ করে। এক্ষণে পদ্মা কীৰ্ত্তিনাশা ও ভাঙ্গনী নামক দুই শাখায় বিভক্ত হইয়া মেঘনায় পড়িয়াছে। ব্ৰহ্মপুত্রের মূলস্রোতও জবুনা নামক নবোথিত শাখা দিয়া পদ্মাতে পড়িয়া, তাহার আকার আরও ভীষণ করিয়া তুলিয়াছে। আর যে ভাগীরথীর তীরে এক সময়ে বঙ্গদেশের প্রধান প্রধান রাজধানী প্রতিষ্ঠিত ছিল, পদ্মার প্রভাবে তাহার গতি মন্দীভূত হইয় গেল। যখন পদ্ম এইভাবে প্রবল হইল, তখন ভাগীরথীর প্রবাহ মন্দীভূত হইতে লাগিল। নবদ্বীপ পর্য্যন্ত তাহার এই অবস্থা ছিল। তথায় জলঙ্গী নামক পদার একটি শাখা আসিয়া ভাগীরথীতে মিশিয়া তাহাকে সজীব করিল। ফলে

  • বাঙ্গালার পুরাবৃত্ত ২২–৯৩ পৃঃ বিক্রমপুরের ইতিহাস ৬-৭ পৃঃ মুর্শিদাবাদে *fsso, slow os, co-sy %, Census Report, 1891, pp. 39–40. *: