পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిచి যশোহর-খুলনার ইতিহাস । বিস্তৃত ছিল। দিগ্বিজয়-প্রকাশ নামক 'প্রাচীন গ্রন্থে * ইহার এইরূপ সীমা নির্দিষ্ট হইয়াছে ঃ-- “ভাগীরথাঃ পূৰ্ব্বভাগে দ্বিযোজনতঃ পরে। পঞ্চযোজনপরিমিতো হুপিবঙ্গো হি ভূমিপ ॥ উপবঙ্গে যশোরাদিদেশাঃ কানন-সংযুতাঃ । জ্ঞাতব্য নৃপশাদূল বহুলাহু নদীঘুচ৷” এই বহু নদনদী-সমন্বিত কাননসংযুক্ত বিস্তীর্ণ প্রাচীন উপবঙ্গ প্রদেশ বঙ্গদেশেরই একাংশ ছিল। ইহাই বৌদ্ধযুগে সমতট ও সেন-রাজত্বকালে বাগড়ী আখ্যা পাইয়াছিল। আমাদের আলোচ্য কানন-কুন্তলা যশোহর-খুলনা এই উপবঙ্গের এক প্রধান অংশ। যশোহর ও খুলনার উৎপত্তি জানিতে হইলে, উপবঙ্গের উৎপত্তির ইতিবৃত্ত সঙ্কলন করিতে হইবে । উপবঙ্গ একটি প্রকাণ্ড দ্বীপ। ইহা এক্ষণে একটি দ্বীপ হইলেও পূৰ্ব্বতন ংখ্য দ্বীপের সমষ্টি। সব দ্বীপগুলিই গঙ্গার পলি হইতে উৎপন্ন। তাহাই বুঝাইবার জন্তই পূৰ্ব্বে গঙ্গার গতিপথের বিবরণ দিয়াছি। হিমালয়ের উপরে ও পাদদেশে গঙ্গার বেগ অত্যন্ত অধিক। যত সমতল ক্ষেত্রে আসিতে থাকে, গঙ্গার বেগ তত কমিতে থাকে ; তৎপরে বামে দক্ষিণে বহু শাখা বিস্তার করিয়া অগ্রসর হইতে হইতে বেগ আরও মন্দ্রীভূত হইতেছিল। এইরূপে জল কতকটা স্থির হইলে উহাতে যে বহুল পৰ্ব্বত-রেণু মিশ্রিত থাকে, তাহা নিম্নে পতিত হইয়া ভূমি গঠন করে এবং ক্রমে দ্বীপের উদ্ভব হয়। বর্ষার সময়ে গঙ্গার জলে এই গৈরিক-রেণু এত অধিক থাকে, যে জল রক্তাভ হইয়া যায়। উহার তৎকালীন বর্ণকেই গৈরিক রঞ্ছ বলে । গঙ্গার গাত্র-রঙ ভারতবাসীর বড় প্রিয় বস্তু। গঙ্গার কুলে বা সন্নিকটে যাহারা বাস করেন, প্রত্যহ গঙ্গাস্নান করিতে করিতে তাহাদের বস্ত্ৰ গৈরিক বর্ণ ধারণ করে। গঙ্গাকূলে বাস এবং গঙ্গাস্নান এদেশে এত গৌরবের যে সাধু সন্ন্যাসিগণ গঙ্গা হইতে দূরে থাকিলেও তাহাদের সমস্ত • দিগ্বিজয়প্রকাশ এক বিরাট গ্রন্থ। বিশ্বকোষ-সম্পাদক স্ত্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বন্ধ মহাশয়ের বিখ্যাত লাইব্রেরীতে ইহার হস্ত লখিত পুথি রক্ষিত হইয়াছে। ইহা প্রতাপাদিত্যের আবির্ভাব সময়ে বা তাহার প্রাক্কালে কবিরাম নামক এক পণ্ডিত কর্তৃক লিখিত হয় ।