পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ—দ্বীপের প্রকৃতি । $89 রহিয়াছে, এইরূপ আলোচনা হইতে তাহারই কতকটা আভাস পাওয়া যাইতে পারে। সুতরাং গ্রামগুলির এইরূপ সাধারণ আলোচনাকে আমরা দেশের প্রাকৃতিক অবস্থা নির্ণয়ের প্রথম পন্থা করিতে পারি। দ্বিতীয়তঃ যশোহর ও খুলনার গ্রামগুলির কতকটা তুলনা করিলে উহাদের পূৰ্ব্বতন অবস্থা সম্বন্ধে আরও কিছু তথ্য পাই। “ডাঙ্গা” সংযুক্ত গ্রামের নাম যশোহরে ২২৬ খানি এবং খুলনায় ১২১ খানি হইবে। ইহা হইতে একটি অনুমান করা যায়। প্রথমে যখন জল হইতে জমি উঠিতেছিল, তখন বহুস্থান “ডাঙ্গা” হইয়া গেল ; প্রথমে উত্তরদিকে অর্থাৎ যশোহরে “ডাঙ্গ” হইল, লোকে প্রথমতঃ যশোহরের দিকে বসতি আরম্ভ করিল। ক্রমে খুলনা অঞ্চলেও ডাঙ্গ হইল, কিন্তু বসতি তেমন হইল না মুতরাং সেদিকে ডাঙ্গ উঠিয়া বহুকাল পড়িয়া থাকিয়া অবশেষে জঙ্গলে পরিণত হইয় গেল। যে সব স্থানে বসতি হইল না, সে সকল স্থানের ডাঙ্গা নাম থাকিল না। খুলনায় শেষে জঙ্গল কাটিয়া বাসভূমি প্রস্তুত হইল। এজন্য যশোর অপেক্ষ খুলনায় “কাটি” যুক্ত গ্রাম অধিক। যশোহরে ২১ খানি ও খুলনায় ৬৯ খানি গ্রামে “কাটি” আছে এবং ক্রমে যেমন মুন্দরবন আবাদ হইতেছে, ততই কাটির সংখ্যা আরও বাড়িবে। এইরূপে খুলনায় যতগ্রামে “বুনিয়া” আছে, যশোহরে তত নাই। যশোহরে দিয়াড় একটি আছে, খুলনায় অনুন ৫টি। তৃতীয়তঃ যে দেশ দ্বীপাকারে জল হইতে উখিত হয় এবং যে দেশের চতুর্দিকে নদী, খাল পরিবেষ্টিত থাকে, সেদেশে যথেষ্ট পরিমাণ মৎস্ত পাওয়া যায় এবং দেশের অধিবাসিগণেরও মৎস্ত একটি প্রধান খাদ্যোপকরণ হয়। এই জন্য সেদেশে কালে মৎস্তের নামে বহুসংখ্যক গ্রামের নাম হয়। যশোহর খুলনায়ও তাহাই হইয়াছে। যেমন যশোহর জেলায় ইলিশমারি, ইচাখা, ইচাখোল, কইখালি, কাতলাকর, খলিসাখালি, চাদ, চেঙ্গ, চিংড়া, টাকিপুর, টেঙ্গর, টেঙ্গরালি, পুটিমারি, পুটির, বাটুকেমারি, বাটকেডাঙ্গ, বোয়ালিয়, ভেটকিয়া, মাগুরা, মাগুরাডাঙ্গ, মাগুরখালি, রুইজানি, শলুয়, শৈলকুপ, শৈলমারি, সিঙ্গ, সিঙ্গি প্রভৃতি। এবং খুলনা জেলার ইলিশপুর, কইখালি, ফাইনারি, কাতল, খলিসাখালি, খালী, গঙ্গালমারি গজালি, গাড়ারি, চাঁদ, চিতলমারি, চিংড়া, চিংড়াখালি, টাকি, টাঙ্কিপুর, টাকিয়ারি, টোয়;