পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমতটে চীন-পর্য্যটক । ᎼbᏅ☾ সেই স্থানেই প্রায় ইষ্টকের প্রাচীর বাহির হইতেছে। লোকে তুলিয়া লইয়া গৃহভিত্তি, প্রাচীর, ইগো ও মসজিদ প্রভৃতি নিৰ্ম্মাণ করিতেছে। যে সকল উচ্চ ঢিবি স্থানে স্থানে জঙ্গলাবৃত হইয়া রহিয়াছে, সাধারণ লোকে নানাবিধ ভয়ে সেগুলি খনন করিতে যায় না, গবর্ণমেণ্ট বা জেলার ম্যাজিষ্ট্রেটের চেষ্টায় উহার কতকগুলি খনিত হইলে অনেক প্রাচীন তত্ত্ব বাহির হইতে পারে। চতুর্থত বারবাজারে স্থানে স্থানে কতকগুলি পাথর পড়িয়া আছে, উহা বৌদ্ধ আমলের প্রস্তর বলিয়া বোধ হয়। উপরোক্ত গোড়ার পুকুরের পশ্চিমদিকে যে অভগ্ন মসজিদ এখনও দণ্ডায়মান আছে, তাহার প্রাচীরগাত্রে চারিধানি প্রস্তর স্তম্ভ গাথুনির ভিতর প্রবেশ করান রহিয়াছে। এই মসজিদের উত্তর পশ্চিম কোণে একটি বঁাশ বাগানের মধ্যে একটি প্রস্তরস্তম্ভ মাটীতে পোত রহিয়াছে। উহার ৩-৮ মাত্র বাহিরে আছে, অধিকাংশই মৃত্তিকার নিম্নে প্রোথিত বলিয়া বোধ হয়। এইস্থান হইতে আরও পশ্চিমদিকে যাইতে পথের কাছে একখানি ১–৯%x ১-৯র্ণ পরিমিত মুন্দর কালো পাথরের পাদপীঠ পড়িয়া রহিয়াছে। চেরাগদানি পুকুরের পশ্চিম পারে মসজিদের উপর ১ খানি এবং গলাকাটি দীঘির দক্ষিণ পারে মসজিদের উপর ১ খানি পাথর আছে। আরও কত জঙ্গলের মধ্যে আছে বা দুরবর্তী স্থানে স্থানান্তরিত হইয়াছে, তাহা জানিবার উপায় নাই। দেখিলেই বোধ হয় এই হিন্দু বৌদ্ধ আমলের মঠ-মন্দিরের পাথরগুলি মুসলমানগণ সকল স্থানে কাজে লাগাইতে পারেন নাই। এই সকল প্রস্তর কোথা হইতে আসিল সে সম্বন্ধে আমাদিগকে পরে বিশেষ বিচার করিতে হইবে। পঞ্চমতঃ মগধ ও বঙ্গের ইতিহাস আলোচনা করিয়া দেখা গিয়াছে যে, যেখানে কোন হিন্দু বা বৌদ্ধ-প্রতিপত্তির প্রধান স্থান ছিল, পাঠান আমলে মুসলমান প্রচারকগণ সৰ্ব্বাগ্রে সেই স্থানেই দেখা দিয়াছিলেন এবং মঠ বা মন্দির ভগ্ন করিয়া, জাতিধৰ্ম্মের উপর হস্তক্ষেপ করিয়া মুসলমান ধৰ্ম্ম প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। বিশেষতঃ যেখানে বৌদ্ধ সংঘারাম ছিল, সেইখানেই তাহদের অধিক আক্রোশ পড়িত, কারণ অহিংসাধৰ্ম্মী, নিরীহ বৌদ্ধশ্রমণগণ শত্রুর আক্রমণে বিশেষ বাধা দিতে সক্ষম ছিলেন না, এবং একটি সংঘারাম জৰিকার করিতে পারিলে এককালে বহুলোক মুসলমানধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইয়া যাইও । যাহারা তাঁহাতে বাধা দিত, তাহারা অনেকস্থলে জসিমুখে নিপাতিত হইত। 8