পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२०8 যশোহর-খুলনার ইতিহাস । বারবাজারে যেমন একখানি প্রস্তর প্রোথিত আছে, এথানিও সেই একই আদর্শে গঠিত। লোকের প্রবাদ খাজাহান আলির সময়ে এই প্রস্তরখানি নিকটবর্তী রাজাপুর গ্রামে সোণাই পণ্ডিতের পুকুর হইতে উঠিয়াছিল। এই গ্রাম এবং লোকের নাম উভয়ই সন্দেহজনক। পালরাজত্বের সময়ে যেখানে সেখানে যেমন রাজা হইয়াছিল, এখানে তেমন রাজা থাকা বিচিত্র নহে ; আর পণ্ডিত উপাধি যে বৌদ্ধত্বজ্ঞাপক সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। মসজিদকুড়ের সন্নিকটেও আমাদিতে রাজা ইন্দ্রনারায়ণের বাড়ী ছিল। তিনিই সম্ভবতঃ এখানকার বিখ্যাত কালিকা দীঘি খনন করেন। এই জলাশয় পাহাড় সমেত ১•• বিঘা হইবে। দীর্ঘিকার এক কোণে বর্তমান সময়ে শ্ৰীকৈলাসচন্দ্র ঘোষ ও যদুনাথ ঘোষ মহাশয়ুদিগের বসতি বাটতে উক্ত রাজবাটীর ভগ্নাবশেষ লুক্কায়িত আছে। পার্থে একটি জলটুঙ্গি পুকুর অর্থাৎ পুকুরের মধ্যস্থানে মটর ঢিপি আছে; ঐস্থানে গ্রীষ্মকালে রাজপরিবার বায়ু সেবন করিতেন । হাতিবাধা নামে আর একটি দীর্ঘ পুকুরের খাতচিহ্ন আছে। উহার পাশ্বে একখান সুন্দর প্রস্তর পড়িয়াছিল। ইহাও কোন বিশেষ কারুকার্য্যখচিত হৰ্ম্ম্যস্তম্ভের অংশবিশেষ। এই সকল নানা নিদর্শন হইতে মনে হয়, এই দুই স্থানে প্রাচীন কালে কোন কোন বৌদ্ধবিহার বা হিন্দু মন্দির ছিল । বৌদ্ধযুগে যে সকল প্রস্তরে ভারতের নানাস্থানে বিশাল চৈতা, স্তম্ভ বা স্তুপ নির্মিত হইয়াছিল, যে ভাস্কর্যোর ফলে প্রস্তরগাত্রে মানুষের চিত্তপ্রকৃতি সহজে ফুটিয়া উঠিত, তাহারই আয়াসঙ্গীন অস্ত্রকৌশলে উক্ত দুই স্থানের স্তম্ভ ও পাদপীঠ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। বৌদ্ধবিহার বা হিন্দুমন্দিরের প্রস্তর আনিয়া মুসলমান শিল্পী তাহার সাহায্যে এবং নিজেদের উদ্ভাবিত নূতন প্রণালীর ইষ্টকদ্বারা গুম্বজ ও মিনার গড়িয়া, বঙ্গদেশে মহম্মদীয় স্থাপত্যের নিদর্শন রাখিয়া গিয়াছেন। পাঠান শাসনকালে কোন স্থান বিশেষে অত্যাচার হউক বা না হউক, অত্যাচারের ভয়ে, অধিবাসীরা দেবমূৰ্ত্তি সকল পুষ্করিণীর জলে, নদীগর্ভে বা জঙ্গলে নিক্ষেপ করিত। এই ভাবে কত মূৰ্ত্তি যে লোকচক্ষুর অন্তরালে পড়িয়াছিল, তাহার ইয়ত্ত নাই। পাঠান বা মোগলের হাতে যাহা নিস্তার পাইয়াছিল, পাশ্চাত্য নীলকরের হস্তে তাহ ধ্বংসপ্রাপ্ত হইয়াছে। এক সময় যশোহর ও খুলনার নানা স্থানে যে শত শত নীল-কুঠি প্রস্তুত হইয়াছিল, তাহার অনেক উপকরণ নিকটবৰ্ত্তী ভগ্ন মন্দির বা মসজিদ