পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থা জাহানের শেষ জীবন। ○○。 প্রাতে গাত্ৰোখান করিয়া তিনি এই সমস্ত অর্থ পুণ্যকৰ্ম্মে বায়িত করিতেন ; সঞ্চয়ার্থ কিছুই রাখিতেন না। একদিন তাহার স্ত্রী ঐ অর্থ হইতে কিছু সঞ্চয় করিয়াছিলেন ; তাহার পর হইতে সেরূপ ঈশ্বরদত্ত অর্থপ্রাপ্তি বন্ধ হইয়া গেল। তাহার কয়েকদিন পরেই পীর সাহেব একখানি কোরাণ হাতে লইয়া, উহা পাঠ করিতে করিতে, কবরে প্রবেশ করেন, আর উঠেন নাই। জনশ্রুতি এইরূপ যে অদ্যাবধিও তিনি সেই কবরমধ্যে কোরণ পাঠে নিরত আছেন ; নিষ্ঠবাৰু মুসলমানগণ সে পাঠধবনি শুনিতে পান। যে সকল কীৰ্ত্তিচিহ্নের সংক্ষিপ্ত পরিচয় এখানে দেওয়া গেল, তাহ ব্যতীত আর শত শত চিহ্ন সমস্ত খালিফতাবাদে যেখানে সেখানে পড়িয়া আছে। সে সকলের প্রকৃত ঐতিহাসিক অমুসন্ধান হয় নাই। যেখানে এক্ষণে বাগেরহাট সহর, এখানে থাঞ্জালীর বাগান ছিল ; উত্তরকালে সেই বাগানে যে হাট বসিয়াছিল, তাহাই বাগেরহাট নামে অভিহিত হয়। বাগেরহাট নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে আরও অনেক অনুমান আছে। যথাস্থানে তাঙ্গ বিবৃত হইবে। পূৰ্ব্ব পশ্চিমে ৫ মাইল এর উত্তর দক্ষিণে প্রায় ৪ মাইল, এই বিস্তৃত স্থান লইয়া প্রাচীন খালিফা তাবাদ সহর হইয়াছিল ; সহরকে হাবেলী কসবাও বলিত । খালিফাতাবাদ সহর বহু বিস্তৃত পরগণা ছিল। খালিফাতাবাদ সহর এক্ষণে বাগেরহাট, দশানি, কৃষ্ণনগর, বাসাবাটী, কাড়াপাড়া, রণবিজয়পুর, কাটাল, কাটালতলা, বাদামতলা, সুন্দরের ঘোন বারাকপুর, মগরা প্রভৃতি বহুসংখ্যক গ্রামে বিভক্ত হইয়াছে । - থা জাহান প্রথম জীবনে যেরূপ এক প্রকার স্বাধীনভাবেই রাজত্ব করিয়াছিলেন, শেষভাগে বোধ হয় তাহ ছিল না। তখন সম্ভবতঃ বঙ্গেশ্বর মামুদ সাহের সহিত তিনি সন্ধিস্থত্রে আবদ্ধ হইয়াছিলেন, বঙ্গীয় সুলতানের প্রতিনিধিস্বরূপ তিনি রাজ্যস্থাপন করিয়া তাহার নাম রাখিয়াছিলেন, খালিফাতাবাদ অর্থাৎ খালিফা বা প্রতিনিধির সংস্থাপিত নবোখিত রাজ্য। খ জাহান প্রকাশ্যভাবে স্বাধীন হইয়া যে রাজ্যশাসন করেন নাই, তাহার কয়েকটি প্রমাণ আছে। প্রথমতঃ তিনি নিজ নামে কোন মুদ্র অঙ্কিত করেন নাই। দ্বিতীয়তঃ ঢাকায় একটি মসজিদের দ্বারদেশে যে খাজা জাহানের নামাঙ্কিত লিপি পাওয়া গিয়াছিল, তিনি এবং খালিফাতাবাদের র্থ জাহান অভিন্ন ব্যক্তি বলিয়া নির্দিষ্ট হইয়াছেন।