পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘VHe যশোহর-খুলনার ইতিহাস । মূল বাহিক কিন্তু বিপ্লবের কারণ স্বাভাবিক হইয় থাকে। পাঠানযুগে বঙ্গের নানাস্থানে হিন্দু-মুসলমানে যে বিবাদ, তাহ বিদ্রোহের সংজ্ঞাভুক্ত ; আর হুসেন সাহের আমলের সুবর্ণযুগে শ্রীচৈতন্ত কর্তৃক যে দেশময় ধৰ্ম্মান্দোলন হইয়াছিল, তাহা বিপ্লব। ফরাসী বিপ্লবে সমস্ত ইয়ুরোপের গতিমতি ফিরাইয়া দিয়াছিল, চৈতন্য বিপ্লবে বঙ্গকে এক নূতন ছাচে গড়িয়াছে। কিন্তু চৈতন্ত যে বিপ্লবের প্ৰবৰ্ত্তক, তাহার পথ বহুদিন হইতে প্রস্তুত হইতেছিল। চৈতন্তের জন্মে নবদ্বীপ পবিত্র হইয়াছে বটে, কিন্তু শত শত চৈতন্তের আবির্ভাবে বঙ্গের প্রতিবিভাগ তখন সে আন্দোলনের পোষকতা করিবার জন্ত উদ্‌গ্ৰীব হইয়াছিল। নগণ্য যশোহর-খুলনাও তখন সে যজ্ঞের আহুতি দিতে পরায়ুখ হয় নাই। চৈতন্ত কেন্দ্ৰমূৰ্ত্তি হইলেও, রূপসনাতন বা হরিদাসের মত র্তাহার ভক্ত পার্ষদগণ যে র্তাহার পাশ্বদেশ সমুজ্জ্বল করিয়াছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই। যশোহর-খুলনার রূপসনাতন ও হরিদাস স্বীয় স্বীয় জন্মপল্লীর গওঁী ছাড়াইয়া বৈষ্ণবধৰ্ম্মের সুদৃঢ় স্তম্ভরূপে দেশের সম্পত্তি হইয়া রহিয়াছেন। আমরা রূপসনাতনের পুণ্যকথা এখানে বলিয়। পরে হরিদাসের পবিত্র প্রসঙ্গ তুলিব । পাঠান-রাজত্বের শেষাংশে চৈতন্তই প্রধান চরিত্র। র্তাহাকে বাদ দিয়া বঙ্গের ইতিহাসের কথাও চলে না, জেলার ইতিহাসও হয় না । জেলায় জেলায় যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চৈতন্তের আবির্ভাব হইয়াছিল, তাহ বাদ দিলে চৈতন্তের প্রভাব নিম্প্রভ হইয় পড়ে। রূপসনাতনের অকুষ্ঠিত শাস্ত্রজ্ঞান ও হরিদাসের অলৌকিক প্রেমোন্মাদ একত্র করিলে চৈতন্তের আভাস পাওয়া যায়। তাই যশোহরখুলন চৈতন্ত ছাড়া নচে । সুলতান হুসেন সাহ হিন্দু-প্রতিভার বিশেষ সমাদর করিতেন। তিনি বাছিয়া বাছিয়া হিন্দুর মধ্য হইতে র্তাহার উচ্চ কৰ্ম্মচারী নিৰ্ব্বাচন করিতেন। রাজত্বের প্রথম হইতে র্তাগর প্রধান অমাত্য ছিলেন, দক্ষিণরাঢ়ীয় কায়স্থকুলতিলক গোপীনাথ বসু। এই গোপীনাথকে তিনি উপাধি দিয়াছিলেন পুরন্দর খাঁ । পুরন্দর থার পর তাহার প্রধান অমাত্য বা উজীর হইয়াছিলেন রূপ ও সনাতন। সনাতন শেযজীবনে বৈষ্ণবতোষিণী নামক এক গ্রন্থ রচনা করেন ; তাছার ভ্রাতুপুত্র জীবগোস্বামী তাছার অনুমতিক্রমে উহার সংক্ষেপ করিয়াছিলেন। ইহারই নাম “লঘুতোষিণী”। লঘুতোষিণী হইতে রূপসনাতনের