পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামচন্দ্র থা। ৩৭৩ দেওয়া যাইবে। শুনিয়া নিতানন্দ অভিসম্পাত করিয়া গেলেন যে মণ্ডপগৃহ গোবধকারী স্নেচ্ছের যোগ্য বাসভূমি হইবে। তাহার সে অভিসম্পাত অচিরে কার্য্যে পরিণত হইয়াছিল। রামচন্দ্র রাজস্ব না দিলেও হুসেন সাহ তাহার উপর অত্যাচার করেন নাই। কিন্তু হুসেনের মৃত্যুর পর তৎপুত্র নসরৎসাহের আমলে বঙ্গেশ্বরের সৈন্য সামন্ত কর আদায় করিবার জন্ত উপস্থিত হইল ; এবং নিতানন্ম উঠিয়া গেলে রামচন্দ্র যে মণ্ডপ-ঘরে মাটি খুড়িয়া গোমন্ত্রলেপন দ্বারা পরিশুদ্ধ করিয়া লইয়া ছিলেন, সেই ঘরেই মুসলমান-সৈন্ত আসিয়া বাসা করিল, অবধ্য বধ করিয়া ঘরে মাংসাদি রন্ধন করিল এবং - “স্ত্রী পুত্র সহিত রামচন্দ্রেরে বাধিয়া তার ঘর গ্রাম লুটে তিন দিন রহিয়া।” (চরিতামৃত) এইভাবে রামচন্দ্রের পাপের প্রায়শ্চিত্ত হইল। সৈন্ত সামন্তের অমানুষিক অত্যাচারে সে গ্রাম লোকশূন্ত শ্মশানভূমি হইয়া গেল। স্থানীয় প্রবাদে কিন্তু রামচন্দ্রের শোচনীয় পরিণাম সম্বন্ধে আর একটু ঔপন্যাসিকতা আছে। রামচন্দ্রের রাজবাটীতে রাজপরিবারের আত্মরক্ষার্থ ভূগর্ভে একটি ক্ষুদ্র দুর্গ ছিল; উহার মধ্যে প্রবেশের জন্ত বাহির দিক্ হইতে একটিমাত্র দরজা ছিল। সে দরজাটিও এমন স্থানে ছিল যে কেহ সহজে তাহার সন্ধান পাইত না। নবাব-সৈন্সের আগমনে রামচন্দ্র সমস্ত ধনরত্ব ও পরিবারবর্গ সহ এই গুপ্তহুর্গে প্রবেশ করিয়াছিলেন। উহার গুপ্ত দ্বারে ভাল লাগাইয়াবিশ্বস্ত ভৃত্য কালু উহার চাবি লইয়া এক বৃক্ষোপরি লুকাইয়া রহিল। কালুর উপর আদেশ ছিল নবাব সৈন্ত দেশ ত্যাগ করিলে সে গুপ্তার উন্মোচন করিয়া দিবে। নবাবসৈন্ত আসিয়া রামচন্দ্রকে না পাইয় তাহার বাট ও পাশ্ববর্তী গ্রামের উপর ভীষণ অত্যাচার করিল এবং অবশেষে চলিয়া যাইবার উপক্রম করিতেছিল, এমন সময় একজনে দেখিল একটি পুষ্করিণীর উপর বিলম্বিত ডালে পত্রগুচ্ছের আড়ালে কাবুপাইয়া আছে, অংকণাং দর্শকের হস্ততি স্থক হইত্ত্বে,তীর নিক্ষিপ্ত হইল এবং সে অব্যর্থ সন্ধানে আহত হইয়া কালুনিয়স্থিত পুকুরে পড়িয়া পঞ্চৰ পাইল। তদবধি পুকুরের নাম কালুর পুকুর। এখনও কালুর পুকুর আছে। এখনও প্রাচীন রাজবাটারপ্রধান ভাগসমূহেরউত্তরদিকে একটা খোঁ স্বান দেখাইয় স্থানীয় লোকে বলিয়া থাকে উহা “পাটনাচের জমি” এবং উহারই