পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গাজীর আবির্ভাব। Óፃ፭) তাহার কস্তাকে বিবাহ করেন। সেই বরখান গাজীও আমাদের প্রস্তাবিত “গাজীর গীতের” বরখান্‌ গাজী এক ব্যক্তি বলিয়৷ মনে হয় না। কারণ জাফর গর মসজিদের পারশীক লিপিতে যে তারিখ আছে, তাহাতে ১২৯৪ খৃষ্টাব হয় ; কিন্তু সে সময়ে যশোহর জেলায় মুকুট রাজা প্রাচুর্ভূত হন নাই। সে যুগে যশোহর-খুলনার অনেকস্থান বসতির অনুপযুক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। তবে উভয় বরখান গাজী যে জোর করিয়া রাজার কন্যা কাড়িয়া লইয়৷ বিবাহ করিয়া ছিলেন, তাহা সত্য কথা । উক্ত জাফর খার নিজেরই নাম বা র্তাহার কোন সহচরের নাম দরাফ খা ছিল, তাহ জানা যায় না। দরাফ খাঁ যে শেষ জীবনে গঙ্গা-ভক্ত হইয়৷ অপূৰ্ব্ব গঙ্গাস্তোত্র রচনা করিয়াছিলেন, তাহ অনেকেই জানেন। সময়ে সময়ে গাজীদিগের মধ্যেও জাতিনিৰ্ব্বিশেষে অতিরিক্ত দয়ালু লোক দেখা যাইত, এজন্ত আমাদের দেশে কোন অতিরিক্ত দয়ালু ব্যক্তিকে “দয়ার গাজী” বলিয়া থাকে। পূৰ্ব্বোক্ত পাঁচ পীরের অষ্ঠতম গাজীর বিশেষ কোন নাম পাওয়া যায় না। তিনি সাধারণতঃ বরখা বা বড়গাজী এবং গাজী সাহেব বলিয়া পরিচিত। র্তাচার সম্বন্ধে একটি প্রচলিত গল্প আছে। তিনি রাজা মুকুটরায়কে পরাজিত করিয়া তাহার রাজা রাজধানী ছারখার করেন এবং তাহার কন্যা চম্পাবতীকে বিবাহ করেন। এই গল্পের ভিত্তি অবলম্বন করিয়া কয়েকজন মুসলমানী বাঙ্গালায় “গাজীকালু ও চম্পাবতী” পুথি রচনা করিয়াছেন, এবং ঢাকা ও কলিকাতা হইতে উহার কয়েকটি সংস্করণ বাহির হইয়াছে। যদিও এই সকল সুলভ অশুদ্ধ “বটতলার” পুথি শিক্ষিত ব্যক্তির ঘৃণা উৎপাদন করে, তবুও ইহা একশ্রেণীর লোকের যথেষ্ট চিত্ত-বিনোদন করিয়া থাকে। কৰ্ম্মবিরত নাবিকের রাত্রিকালে উন্মুক্তহস্তে প্রদীপে তৈল ঢালিয়া দিয়া, সুরসংযোগে এই পুথি পাঠ করে, তখন সে পার্শ্ববৰ্ত্তী তরণীমালা হইতে সাগ্রহ শ্রোতা পাইয়া থাকে। এই সকল পুস্তকের গ্রাম্য ভাষায় লিখিত আবর্জনারাশির মধ্যে অনুসন্ধিৎসু পাঠকের জন্য কিছু কিছু ঐতিহাসিক তথ্য লুকায়িত আছে। আমরা প্রথমতঃ এই পুথির স্থলমৰ্ম্ম দিয়া পরে ইহার ঐতিহাসিকতার বিচার করিব। বিরাটনগরে সেকেন্দর সাহ রাজা ছিলেন, তাহার রাণী অৰ্জুপান্বন্দরী ; তিনি বলিরাজার কল্প, সুতরাং গঙ্গাদেবীর ভগিনীপুত্র। ইহাদের প্রথম