পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৪৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8०रै যশোহর-খুলমার ইতিহাস । পূৰ্ব্ববঙ্গ হইতে আসিয়াছিল, এজন্য উহাকে বাঙ্গালা ঘর বলে। এই চেরি বা বাঙ্গালা ঘর নিৰ্ম্মাণ করিতেই এদেশের লোক অভ্যস্ত। মন্দিরাদির জন্য তাঁহার যখন ইটের দ্বারা স্থায়ী গৃহ নিৰ্ম্মাণ করিতে লাগিল, তখনও এই চোঁচালী বা বাঙ্গালা ঘরের আদর্শ ভুলে নাই। এইজন্ত এ দেশীয় মন্দিরের ছাদ প্রায়ই চৌচালা ঘরের মত। গোলগুম্বজ মুসলমান আমলে আমদানী হইয়াছিল। কোন কোন স্থানে ইট দ্বারাই দোচালা বাঙ্গাল ঘর হইত ; কখনও বা ঐরূপ দুইখানি বাঙ্গালা একত্র জুড়িয়া জোড় বাঙ্গালা নিৰ্ম্মাণ করা হইত। চৌরি ঘরে চারিধারে চারিখানি বারানায় চাল দিয়া যেমন আটচালা ঘর হয়, মন্দিরেও ঠিক ঐ ভাবে চারিধারে ঘুরাইয়া বারান্দা দেওয়া হইত। বড় চৌচালা মন্দিরের উপরে চারি কোণে চারিটি এক মধ্যস্থলে একটি চূড়া দেওয়া হইত, এজন্ত ঐক্লপ মন্দিরের নাম পঞ্চরত্ন। আটচালা মন্দিরে উক্ত পাঁচটি চুড়া ব্যতীত বারান্দার চারি কোণে চারিটি চুড়া থাকিত, এজন্ত সেরূপ মন্দিরের নাম নবরত্ব। এই নবরত্ন মন্দিরের খোলা বারান্দায় দুই দুইটি স্তম্ভে তিনটি করিয়া খিলান থাকিত, সেই স্তম্ভে, খিলানে, ছাদের সীমান্তে চারিধারে নানা কারুকার্য্য থাকিত। এইরূপ কারুকার্য্য হিন্দু-স্থাপত্যের বিশেষত্ব ছিল। হিন্দু স্থাপত্যের কোন নিদর্শন দিবার উপায় নাই, কারণ যশোহর-খুলনায় প্রাচীন হিন্দু-যুগের কোন মন্দির নাই। সে সব লবণাক্ত দেশের দোষে এবং অবশেষে পাঠানের অত্যাচারে বিলুপ্ত হইয়াছে। পাঠান-আমলের প্রথমভাগেরও কোন হিন্দুমন্দিরাদি পাওয়া যায় না ; মাত্র পাঠান-আমলের শেষভাগের দুই একটি মন্দিরের পরিচয় পাওয়া যায়। উহার মোগল-বিজয়ের অব্যবহিত পূৰ্ব্বকালে নিৰ্ম্মিত বলিয়া তাহাদিগকে মোগল-স্থাপত্যের অন্তভূক্তও করা যায়। ডামরেলীর নবরত্ন ও ইচ্ছাপুরের নবরত্ন এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য । ইহাদের বিষয় আমরা মোগলযুগে বিচার করিব। পাঠানের যে সকল মসজিদাদি নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন, তাহাতে মোটামুটি একটা নূতন পদ্ধতির পরিচয় পাওয়া যায়। ঐ পদ্ধতি মুসলমানের নিজস্ব হইতে পারে ; কিন্তু উহার অধিকাংশই ভারতবর্ষে অর্জিত। সমষ্টিতে পদ্ধতিটি মুসলমানীয় হইলেও, ব্যষ্টিতে উহা হিন্দুর নিকটই ঋণী। হিন্দুমন্দিরের মত এক গুৰজ, সেইরূপ স্তম্ভ, কাৰ্ণিশ ও কারুকার্য্য। পাঠামদিগকে বাধ্য ইয়াও এরূপ