পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৫০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাঠান আমলে দেশের অবস্থা । 8yტ হিন্দু অধ্যাপকের কখনও নিম্ন বা অপর জাতিকে সংস্কৃত শিখাইতেন না। পড়িবার পুথিপত্র সমস্তই তালপত্রে লিখিত হইত। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে কাগজের প্রথম প্রচলন হয়। তখন এ দেশীয় লোকে অনেকে কাগজ প্রস্তুত করিতে শিখিয়াছিল। খুলনা জেলায় এখনও অনেক কাগজীদিগের বাড়ী আছে। শিল্প—যশোহর-খুলনায় যথেষ্ট কার্পাস জন্মিত। তুলসী ও বিশ্বের মত প্রত্যেক ব্রাহ্মণবাড়ীতে কার্পাসের নিশ্চিত ব্যবস্থা থাকিত। গৃহে গৃহে চরকা ছিল ; ব্রাহ্মণীগণ কার্পাসতুলা হইতে স্থতা প্রস্তুত করিতে পারিতেন, এবং অতি সূক্ষ্ম স্বত্রে নবগুণ উপবীত প্রস্তুত করিয়া যথেষ্ট শিক্তনৈপুণ্যের পরিচয় দিতেন। ভাল পৈতা তৈয়ার করা একটা বিশেষ প্রশংসার জিনিস ছিল। দরিদ্র গৃহস্থের সৃত প্রস্তুত করিত এবং তাতিবাড়ী লইয়া গিয়া সামান্ত “বাণী” বা পারিশ্রমিক দিয়া উহ। দ্বারা আবশ্যকীয় কাপড় প্রস্তুত করিয়া আনিত। এ প্রদেশে কোন কোন স্থানে উৎকৃষ্ট স্বক্ষবস্ত্র প্রস্তুত হইত। কিন্তু বিদেশে যাওয়ার মত অধিক পরিমাণ বস্ত্র প্রস্তুত হইত কি না বলা যায় না। বাশের খগু হইতে গৃহনিৰ্ম্মাণের সরঞ্জাম প্রস্তুত করিতে লোকে যথেষ্ট সৌন্দৰ্য্যজ্ঞান ও শিল্পনৈপুণ্যের পরিচয় দিত। বাশের ছিচে বা কাচনীর বেড়ায় বেতের বান্ধনে বড় কারুকার্য্য প্রকাশ করিত। নানাবিধ জলজ গাছের ছাল বা “বেতী” হইতে মাছুর ও শীতলপাট প্রস্তুত হইত ; নলের দড়মা, মলুয়াপাট ও হোগলা চাঁচ ঘরের বেড়ায় লাগিত এবং অন্যান্ত প্রয়োজন সিদ্ধিও করিত। বেতের ধামা, বাশের “বেতী’ হইতে ডালা, কুল, বাকী সংসারীর একান্ত আবশ্যকীয় ছিল। জগন্নাথের রখে, ঠাকুরের দোলায়, কাঠের সিন্ধুকে, কাঠালের কাঠের কাৰ্য্যে কাষ্ঠশিল্পীর ক্ষমতা প্রকাশ পাইত। এ দেশীয় কামারের উৎকৃষ্ট থাগু, দা, কোদালী, কুড়ালি, খন্ত, জাতি, বঁটা প্রভৃতি নিত্য ব্যবহার্য অস্ত্র প্রস্তুত করিতে অতুলনীয় ছিল। উৎকৃষ্ট “অ্যাটালি” বা মাচালি প্রস্তুত করিয়া ঘরের মধ্যে টাঙ্গাইয়া, উহাতে গৃহসজ্জা রাখিত ; স্ত্রীলোকের কাথা সেলাই ও "সিক।” প্রস্তুত করিয়া অন্ত দেশকে পরাজয় করত যশোলাভ করিত। বিবাহাদি শুভকৰ্ম্ম উপলক্ষে “আই” গড়ান, পীড়ি, কুলা ও সরা চিত্রিত করা প্রভৃতি কর্ঘ্যে গ্রামে গ্রামে দুই এক স্ত্রীলোক প্রভূত সন্মান ও পুরস্কার পাইতেন। নৈবেদ্ধ রচনা, শিবগান ও আলিপন দেওয়া গৃহশিল্প ছিল। উৎসবাদিতে স্ত্রীলোকেরা বহুজনে মিলিয়া উলুধ্বনি বা