পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৫১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ᎼᏔ যশোহর-খুলনার ইতিহাস । বা উৎসবে তসর, চেলি প্রভৃতি পট্টবস্ত্র ব্যবহার করিত। গুরুঠাকুরের শিষাবাড়ী যাইবার সময় পট্টবস্ত্রই পরিতেন ; কেহ কেহ রক্তবস্ত্রই অধিক পছন্দ করিতেন। বালক-বালিকার শীতকালে অঙ্গরাখা বা আঙ্গা এবং ছিটের দোপরদা দোলাই গায়ে দিত, গরিব সন্তানের পরিধানের ধুতিখানি ভাজ করিয়া গায়ে দিত ; র্কাথাও শীতনিবারণের প্রধান উপায় ছিল। সধবা স্ত্রীলোকেরা লালপেড়ে শাড়ী পরিতেন, পাঠান-আমলে ডুরে কাপড় আসিয়াছিল কিন্তু পাছাপাড় হয় নাই। যশোহর-খুলনার পূর্বাদ্ধের স্ত্রীলোকে দেবেড়া কাপড় পরিত, কুশদ্বীপে সে পদ্ধতি ছিল না। কাপড়ের অচিল বা অন্ত ভাঁজ করা কাপড় ব্যতীত স্ত্রীলোকের বিশেষ শীতবস্ত্র ছিল না। উষ্ণীষ না বাধিয়া কোন ধৰ্ম্মকাৰ্য্য করা হইত না, ব্রাহ্মণের দূরবর্তী স্থানে যাইবার সময়ও উষ্ণীষ বধিতেন। অন্ত জাতিও তাহার অনুকরণ করিত। মুসলমানের পাগড়ী বাধিতেন ; তাহারা অনেক সময়ে পাগড়ী বদল করিয়া হিন্দুর সহিত বন্ধুত্ব স্থাপন করিতেন ; এইরূপে “পাগড়ী বদল ভাই” হইত। পাঠান-রাজত্বকালে মুসলমানী কায়দা অনেক হিন্দু সমাজে প্রবেশ করিয়াছিল। ব্রাহ্মণেরও দাড়ি রাখিতে এবং কেহ কেহ বা ইজার পরিতেও আরম্ভ করিয়াছিলেন । দুই একটি পারসী বয়েদ না জানিলে ভদ্র-মজলিসে পদার হইত না । কাহাকেও গালাগালি দিবার কালে পারসী ভাষায় গালি দিয়া বলদৰ্প দেখান হইত। দাতে মিশি ও চক্ষুতে সুরমা দেওয়া ক্রমে সংক্রামক হইতেছিল। দাড়ি রাখার পদ্ধতি ক্রমে এত বিস্তৃত হইতেছিল যে, মুসলমান হইতে পৃথক্ বলিয়া পরিচয় দিবার জন্ত শ্মশ্রীধারীর ব্রাহ্মণ হইলে টকি, পৈতা ও তিলক, অন্ত জাতির তুলসী বা রুদ্রাক্ষ মালা বা টকি সাধারণের দৃষ্টিপথবর্তী করিয়া রাখিতেন। বৈদ্যগণ কপালে তিলক, মস্তকে উষ্ণীষ ও স্বন্ধে বৈদ্যকগ্রন্থ লইয়া রোগীর বাড়ীতে যাইতেন । মোল্যাগণ এবং অন্ত মুসলমানেরা নমাজ পড়িবার সময় কাছ দিতেন না ; কিন্তু হিন্দুরা ইহা ভালবাসিতেন না। র্তাহারা মুসলমানদিগকে “কাছাখোলা” বলিয়া ঠাট্টা করিতেন। অধ্যাপকগণ মুক্তকচ্ছ হইলে বিষয়ু-জ্ঞানবিহীন বলিয়া উপহসিত হইতেন। এযুগে হুঙ্কায় তামাক খাওয়ার রীতি ছিল না। কিন্তু ব্ৰাহ্মণের মধ্যে নস্ত অনবরত চলিত। নস্তহীন বা পৈতাহীন একই প্রকার অসম্ভব কথা