পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨8 যশোহর-খুলনার ইতিহাস। নামক একটি ক্ষুদ্র শাখা দক্ষিণ দিকে গিয়াছিল। প্রতাপাদিত্যের সময় উহা সাধারণ খালের মত ছিল, বিশেষ প্রবল নদী ছিল না। ইংরাজ আমলে ১৮১৬ খৃঃ অব্দে ইহা হইতে একটি খাল, কাটিয়া বড় কলাগাছিয়া নদীর সহিত মিশাইয়া দেওয়া হয়। ইহাকে সাহেবখালি বলে। ইচ্ছামতীর ভাটার জল অনেক পরিমাণে এই পথে সরিয়া যাইতে লাগিল, তাহাতে কালিন্দী ক্রমে বড় হইয়া উঠিল। ইহার পূৰ্ব্বে গুডলাড সাহেব যখন চব্বিশ পরগণার কালেক্টর, তখন কালীগঞ্জ হইতে একটি খাল কাটিয়া যমুনাকে বঁাশতলী নদী দিয়া খোল পেটুয়ার সহিত মিশাইয় দেওয়া হয় ; ইহাকে কাকশিয়ালীর খাল (বা Goodl.d creek)বলে। পূৰ্ব্বদেশীয় নদীসমূহ এই খাল দিয়া কালিন্দীপথে সহজে কলিকাতার আসিতে পারিত। সেই জলপথকে আরও সংক্ষিপ্ত করিবার জন্য ১৮৩০ খৃঃ অন্ধে হাসনাবাদের খাল খনিত হয়। এই তিনটি খালের জন্ত বসন্তপুর ও ঈশ্বরীপুরের মধ্যে যমুন-ইচ্ছামতীর দুর্দশা আরম্ভ হয়। এমন সময় ১২৭৪ সালের ১৬ই কাৰ্ত্তিক (১৮৬৭ ১লা নভেম্বর) তারিখে এতদঞ্চলে এক ভীষণ ঝড় হয়। উহাতে সুন্দর বনে এক রাত্রিতে ১২ ফুট পৰ্য্যন্ত জল বাড়িয়া ছিল। তাহার পর দিনই দেখা গেল, যমুনার স্রোতের ভীষণ পরিবর্তন হইয়াছে। বালি জমিয়া যমুনার গতি অনেক পরিমাণে মন্দীভূত হওয়ায়, কালিন্দীর জোয়ার যমুনায় প্রবেশ করিয়া উহাকে দেটািনা করিয়া দিল । ইহাতে অল্পদিন মধ্যে যমুনা ভরাট হইয়া এক প্রকার শুষ্ক হইয়াছে। যমুনার এই আকস্মিক পরিবর্তন ও ভীষণ অবস্থা বহু প্রাচীন তথ্য বিলুপ্ত করিয়া দিয়াছে। এতক্ষণে আমরা দেখিতে পাইলাম যে প্রকৃত সুন্দরবনের নদীগুলির কথা ছাড়িয়া দিলে, কেবলমাত্র গৌরী মধুমতী, নবগঙ্গা-চিত্র, এবং ইচ্ছামতী কালিনী গঙ্গার পাৰ্ব্বত্য স্রোত বহন করিতেছে। এই তিনটি মাত্র নদীস্রোত মিষ্টজল আনিয়া দেশের শোভা সমৃদ্ধি ও উৰ্ব্বরতা বৃদ্ধি করিতেছে এবং ইহারাই চিরায়ুগত প্রথায় গঙ্গার ভূমিগঠন কাৰ্য্যের সহায়তা করিতেছে। কোন প্রকারে ইহাদের গতিরুদ্ধ হইলে, দেশের যে কি গতি হইবে, তাহ নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। -*