পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

బిe যশোহর-খুলনার ইতিহাস। নদী মরিয়া এইরূপে নানাস্থানে ঝিল বা বাওড় হওয়ায় দেশের স্বাস্থ্য নষ্ট হইতেছে, বাণিজ্য বন্ধ হইয়াছে এবং জমির উর্বরতা শক্তি বৰ্দ্ধিত বা নবীভূত হইতেছে না। ভৈরব, কপোতাক্ষ ও যমুনা মরিয়া যাওয়ায় যশোহর জেলা উৎসন্ন যাইতে বসিয়াছে। ১৮৮১ অন্ধ হইতে ইহার লোকসংখ্যা প্রতিবৎসর কমিতেছে। ১৯১১ অব্দের লোকগণনার বিবরণী হইতে দেখা গিয়াছে যে যশোহর জেলায় গত ত্রিশ বৎসরে মোট প্রায় ৫৫০০০ হাজার লোক কমিয়াছে, অর্থাৎ শতকরা ৩ জনেরও অধিক লোক কমিতেছে। অনুসন্ধানে দেখা যাইতেছে যে, যশোহরের সকল উপবিভাগে লোকসংখ্যা কমিয়াছে, কেবল নড়াইলে কমে নাই, বরং বাড়িতেছে । এবং এই একমাত্র নড়াইলে চিত্রার মত বেগবতী মিষ্টসলিল নদী আছে, অন্য সব উপবিভাগেই অধিকাংশ স্থলে নদী মরিয়া গিয়াছে। ঝিনাইদহে যেখানে সব নদীগুলিই শুষ্কপ্রায়, সেই স্থানেই সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক লোক মরিয়াছে। এই মৃত্যুর কারণ ম্যালেরিয়া এবং ম্যালেরিয়ার প্রধান উৎপত্তিস্থল মৃতনদীগুলির বদ্ধজলপূর্ণ জঙ্গলাকীর্ণ ও পূতিগন্ধময় প্রাচীন খাত। সুতরাং লোকক্ষয় নিবারণ করিতে হইলে, নদীগুলির পুনরুদ্ধার একান্ত প্রয়োজনীয়। কোথায়ও থাত কাটিয়া, কোথায়ও গতি ফিরাইয় কোন কোন নদীকে প্রবহমান করিতে হইবে। কিন্তু নদীর গতি আপনি না ফিরিলে ফিরান কঠিন। তবে মানুষের বৈজ্ঞানিক চেষ্টায় যে কতক না হয়, তাহা নহে। তাঁহা ন হইলে পশ্চিমাঞ্চলে বা উড়িষ্যায় নদীর মুখে কপাট এবং আনিকট (anicut ) বা বাধের ব্যবস্থা করিয়া শুষ্কনদী জলপুর্ণ করত ষ্টীমার চালান বা বিস্তীর্ণ ভূভাগে ক্ষেত্রের জন্য জল সঞ্চারের উপায় হইত না। এই জন্য যশোহরবাসী প্রজাবৃন্দ সহৃদয় এবং শক্তিসমৃদ্ধিসম্পন্ন গবর্ণমেণ্টের নিকট কিছু প্রার্থনা করে। সকলেই ভাবিতেছে নদীসংস্কার ব্যতীত এ বিপদ হইতে উদ্ধারের অন্ত উপায় নাই। যমুনার সংস্কার বা ভৈরবের পুনরুদ্ধার জন্য উভয় নদীর শোচনীয় অবস্থার বিষয় কয়েকবার রীতিমত ভাবে গবর্ণমেণ্টের গোচরীভূত করা হইয়াছে। খুলনার জনসাধারণ সভাও গবর্ণমেণ্ট বাহাদুরের নিকট এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা করিয়াছিলেন। গবর্ণমেণ্ট এক্ষণে সাড়ার সন্নিকটে পদ্মার উপর বিরাটু লৌহসেতু নিৰ্ম্মাণ করিয়া উহার উপর দিয়া পুৰ্ব্ববঙ্গ রেলওয়ে চালাইবার ;