পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 যশোহর-খুলনার ইতিহাস । এবং প্রবল মত। কেহ বলেন, এরূপ নামকরণ হওয়া উচিত নহে, কারণ এই বনে অনেকস্থলে সুন্দরী গাছ নাই, অথচ সৰ্ব্বত্রই ইহাকে সুন্দরবন বলে। তাঁহাদের মতে সম্ভবতঃ ইহ সমুদ্রবন শব্দের অপভ্রংশ ; সাধারণ লোকে সমুদ্র বলিতে সমুদুর বলিয়া থাকে। ক্ষু বাখরগঞ্জের ইতিহাস-লেখক মহাপণ্ডিত বিভারিজ সাহেব অনুমান করেন যে ঐ জেলার সুন্ধা নদী হইতে সুন্দরবন নামের উৎপত্তি হইয়াছে। বাখরগঞ্জে সুগন্ধা নামে একটি প্রবল নদী ছিল । এই নদীর কূলে একটি পীঠস্থান আছে ; সতীদেহ ছিন্ন হইলে এইস্থানে ৮ মায়ের নাসিক পতিত হয় ; তদনুসারে স্থান ও নদীর নাম সুগন্ধা হইয়াছিল। সুগন্ধাকেই সাধারণ লোকে সুন্ধা বলে। বাখরগঞ্জের একাংশ পূৰ্ব্বে সুন্ধার কুল বলিয়া উল্লিখিত হইত। বাখরগঞ্জের সভ্যতা ও প্রতিভা এই সুন্ধার কূলেই প্রথম বিভাসিত হইয়াছিল। এই কূলবৰ্ত্তী বনভাগ সুন্ধারবন বা সুন্দরবনে পরিণত হইয়াছে। + কিন্তু এরূপ ধরিলে, অন্তান্ত জেলার অন্তর্গত বনভাগ যে সুন্ধার বন বলিয়া কীৰ্ত্তিত হইবে, ইহা সম্ভবপর নহে। অপর পক্ষে সুন্দরী বৃক্ষ অল্পাধিক পরিমাণে প্রায় সকল বনেই আছে; এবং উহাই সুন্দর বনের প্রধান, স্থায়ী ও মূল্যবান কাষ্ঠ। ইহার গাছে খুব সার হয় ; কাষ্ঠ অত্যন্ত শক্ত ও ভারী ; গাছগুলিতে অধিক ডাল হয় না বলিয়া, ইহাতে লম্বা কাঠ পাওয়া যায় ; গৃহের সরঞ্জাম, নৌকার উপাদান প্রভৃতিরূপে এই কাষ্ঠে অসংখ্য রকম প্রয়োজন সিদ্ধি করে। এজন্য মুন্দরী কাষ্ঠ সুন্দর বনের কাঠের রাজা এবং তাঁহারই নামানুসারে সুন্দরবন নাম হওয়া সঙ্গত ও স্বাভাবিক । কেহ কেহ এরূপ অনুমান করিতেও কুষ্ঠিত হন নাই যে, পূৰ্ব্বে বাখরগঞ্জ অঞ্চল চন্দ্রদ্বীপরাজ্যের অন্তর্গত ছিল ; চন্দ্রদ্বীপের বনভাগকে চন্দ্রদ্বীপবন বলিত। সেই চন্দ্রবন হইতেই সুন্দরবন হইয়াছে। আবার কেহ বা চণ্ডভণ্ড নামে এক বন্য জাতির সহিতও এই নামের সম্বন্ধ স্থাপন করিতে চেষ্টা

  • Revenue History of Sunderbans, F. E. Pargiter, B.A., I. C. S. (1885) and Calcutta Review, Sunderbans vol. 89 p. 280 (1889).

t The District of Bákarganj, its History and statistics by H. Beveridge, B.C. S. p. 24 (note) and pp. 70-71. -