পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র

কথা মনে করতে ভুলব না। সে কথা যাক, আমার মত হচ্ছে এই যে, বুট জুতো পরাকেও স্ত্রীস্বাধীনতা বলে না, গৌন পরাকেও স্ত্রীস্বাধীনতা বলে না, আর মটন দিয়ে রাই খেলেও স্ত্রীস্বাধীনতার ব্যত্যয় হয় না। যদি কোনো পাঠক এমন বুঝে থাকেন যে, বিবিরা যা করে তাই স্ত্রীস্বাধীনতা ও সেইজন্যে আমার প্রতি মহা রুক্ষ হয়ে থাকেন, তা হলে তাঁকে আমার বিনীত নিবেদন এই যে, এই ভুল বোঝা সম্বন্ধে যদি কারু কোনো দোষ থাকে তো সেটা তাঁর বুদ্ধির। তাঁর কানের যদি এমন একটা সৃষ্টিছাড়া রোগ হয়ে থাকে যে, যা তাঁকে বলা যায় নি তা তিনি শোনেন তা হলে সে কান-দুটো যতক্ষণে না বিশেষরূপে মেরামত করা হয় ততক্ষণ তাঁর সঙ্গে আমার মতো লেখক কোনো এলাক্কা রাখেন না। যা হোক, আমি যদি বলি যে, ইংরাজ বিবিয়ানাকে স্ত্রীস্বাধীনতা বলে না (কিন্তু সেই সঙ্গে এও বলি, জাপান-বিবিয়ানা বা বোম্বাই-বিবিয়ানাকেও স্ত্রীস্বাধীনতা বলে না) তা হলেই বোধ করি সম্পাদকমহাশয়ের সঙ্গে ও সম্বন্ধে আমার বিবাদটা চুকে গেল। কেননা সম্পাদক-মহাশয় একপ্রকার স্বীকারই করেছেন যে বিবিদের বিষাক্ত (!) অশোভন (!!) স্বাধীনতা পরিত্যাগ করে যদি ‘নির্বিষ শোভন’ স্বাধীনতা লেখক প্রচার করেন তা হলে তিনি তা আদরের সহিত গ্রহণ করবেন। অনর্থক একটা ভুল বোঝার দরুন গোড়াতেই তিনি তা করতে পারেন নি। ভালো, এখন তো সব মিটমাট হয়ে গেল— তবে এখন স্বস্তিবাচন-পূর্বক স্বাগতসম্ভাষণ করে আমার মতটিকে আদরের সহিত ঘরে নিয়ে যাওয়া হোক— দরজা থেকেই হাঁকিয়ে না দেওয়া হয়।

 সম্পাদক-মহাশয়ের সঙ্গে সাধারণ বিষয়ে তো এক রকম ঐক্য হল, এখন বিশেষ বিশেষ বিষয়ে এমনি ভালোয় ভালোয় মতের মিল

১৭৪