পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র

(pine, কেলু) গাছের অরণ্য পাওয়া যায়, ঘেঁসাথেঁসি pine গাছে অনেক দূর জুড়ে অন্ধকার করে আছে— সে খুব গম্ভীর দেখতে। বাড়িগুলো আমাদের দেশের কুঁড়েঘরের মতো গরিবানা ও গাছপালা ঘাস মাঠের মধ্যে থাকবার উপযুক্ত সুন্দর দেখতে না— সোজা, খাড়া, পরিপাটি দোতালা বাড়ি, বাস করতে খুব আরামের বটে, কিন্তু গাছপালার মধ্যে দেখতে ভালো লাগে না, তবে এক-একটা বাড়ি আপাদমস্তক লতা ও ফুলে ঢেকে গিয়ে খুব ভালো দেখতে হয়েছে।

 বর্ণিমা নিয়ে আর বেশি বকাবকি করব না। তুমি হয়তো এতক্ষণ মনে করছ যে, ‘এ ব্যক্তি কোথা থেকে আকাশ-থেকে-পড়া গোটাকতক কথা পেড়ে তাই নিয়ে অনর্গল বকে যেতে লাগল। কেউ তাকে জিজ্ঞাসা করে নি, কেউ জানতে চায় নি, অথচ গায়ে পড়ে ধরে-বেঁধে কতকগুলো লম্বাচৌড়া information দিতে আরম্ভ করলে।’ যা হোক, এখন আমি ছেড়ে দিলুম তুমি কেঁদে বাঁচ।

দ্বাদশ পত্র

গর্মি কাল। আজ অতি সুন্দর সূর্য উঠেছে। এখন দুপর দুটো বেজেছে। আমাদের দেশের শীতকালের দুপর বেলাকার বাতাসের মতো বেশ একটি মিষ্টি বাতাস বইছে, রোদ‍্দুরে চার দিক ঝাঁ ঝাঁ করছে। এমন ভালো লাগছে, আর এমন একটু কেমন উদাস ভাব মনে আসছে যে কী বলব। মনের sentimental অবস্থায় যে-যে লক্ষণ হয়ে থাকে তা আমার সব হয়েছে, যথা— নিশ্বাস পড়ছে, একটু চুপচাপ হয়ে আছি, মুখটা একটু গম্ভীর হয়ে গেছে

১৯০