বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র

১৮৭৯তে থাকতে পারি সে তো বেশ হয়। কিন্তু রোসো, একটু ভেবে দেখি। ১৮৭৯ খৃস্টাব্দে এমনিই কি আমার সুখের বৎসর গিয়েছে? আহা! এর আগে এমন কত বৎসর গিয়েছে যাদের ধরে রাখতে পারলে চিরজীবন ধরে রাখতুম! যা হয়ে গেছে তা তো হয়ে গেছে। এখন, আমার কুষ্টিতে লেখা আছে যে, ১৮৮১ খৃস্টাব্দে আমার ‘ধনরত্নানি’ একটি ভার্যা ও অনেক মিত্র লাভ হবে; মনে করছি ১৮৮২কে আর ঘরে ঢুকতে দেব না। যা হোক, নতুন বৎসরকে অনেক ক্ষণ ঘরের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল, আসবামাত্রেই তাঁকে আবাহন করতে পারি নি তার জন্যে আমরা তাঁর কাছে শত শত ক্ষমা চাচ্ছি। নতুন বৎসরের আগমনে আজকের দিনের মুখশ্রী বড়ো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নি। আজ ভারী মেঘ ও অন্ধকার করে আছে। নতুন বৎসরের উপক্রমণিকা যদি এই রকম অন্ধকারাচ্ছন্ন হয় তবে এর উপসংহার না জানি কিরকম হবে। টর্কি থেকে বহুদিন হল আমরা আবার লন‍্ডনে এসেছি। টর্কিতে বসন্তের সঙ্গে প্রকৃতির ফুলশয্যা দেখেছিলেম। সেই উৎসব থেকে লন‍্ডনের এই ব্যস্ত ভাবের মধ্যে এসে পড়ে বড়ো ভালো লাগবে না। এখন আমি Mr Kর পরিবারের মধ্যে বাস করি। Mr. K, Mrs. K, তাঁদের চার মেয়ে, দুই ছেলে, তিন দাসী, আমি ও Toby বলে এক কুকুর হচ্ছে এই বাড়ির জনসংখ্যা। Mr. K হচ্ছেন একজন ডাক্তার। তাঁর মাথার চুল ও দাড়ি প্রায় সমস্ত পেকে গিয়েছে। বেশ বলিষ্ঠ ও সুশ্রী দেখতে। যেমন অমায়িক স্বভাব তেমনি অমায়িক মুখশ্রী। তাঁর পরিবারের সকলেই বড়ো ভালো লোক। আমার সঙ্গে অল্প দিনের আলাপেই বেশ বন্ধুত্ব হয়েছে। Mrs. K আমাকে আন্তরিক যত্ন করেন। শীতের সময় আমি বিশেষ গরম কাপড় না পরলে তাঁর কাছে ভর্ৎসনা খাই। খাবার সময় যদি

২০২