পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ত্রয়োদশ পত্র

Ethel, don't you cry! Poor Ethel!’ এমন মজা করে বলে যে সে হাসি চেপে রাখা দুঃসাধ্য। Ethelএর মনে মনে জ্ঞান আছে যে, সে একজন Lady। সে কেমন গম্ভীর ভাবে কেদারায় গিয়ে ঠেস দিয়ে বসে। Tomকে এক এক সময়ে ভর্ৎসনা করে বলা হয়, ‘আমাকে বিরক্ত কোরো না।’ একদিন Tom পড়ে গিয়ে কাঁদছিল। আমি তাকে বললেম, ‘ছি! কাঁদতে আছে!’ অমনি Ethel আমার কাছে ছুটে এসে জাঁক করে বললে, ‘Uncle Arthur, Uncle Arthur, আমি একবার ছেলেবেলায় রান্নাঘরে পড়ে গিয়েছিলেম, কিন্তু কাঁদি নি।’ উঃ! বয়স কত!

 Mr. N ডাক্তারের আর-এক ছেলে বাড়িতে থাকেন, কিন্তু তাঁকে দেখতে পাই নে। তিনি সমস্ত দিন আফিসে থাকেন। কিন্তু আফিস থেকে এলেও তাঁর বড়ো একটা দেখা পাওয়া যায় না। তার কারণ কী জানো? তিনি Miss Iএর সঙ্গে engaged। তাঁদের দুজনে কোর্টশিপ চলছে। রবিবার দু বেলা তাঁকে নিয়ে তাঁর চর্চে যেতে হয়। যখন বিকেলে একটু অবসর পান, তাঁর বাড়িতে গিয়ে এক পেয়ালা চা খেয়ে আসেন। প্রতি শুক্রবার সন্ধে বেলা তাঁদের বাড়িতে তাঁর নেমন্তন্ন আছে। এই রকমে তাঁর সময় ভারী অল্প। উভয়ে পরস্পরকে নিয়ে এমন সুখী আছেন যে, অবসর কাল কাটাবার জন্যে অন্য কোনো জীবের সঙ্গ তাঁদের আবশ্যক করে না। শুক্রবার সন্ধে বেলায় যদি আকাশ ভেঙে পড়ে তবু Mr. N পরিষ্কার করে চুলটি ফিরিয়ে, পমেটম মেখে, কোট brush করে ফিট‍্ফাট্ হয়ে, ছাতা হাতে করে বাড়ি থেকে বেরোবেনই। একবার খুব শীত পড়েছিল, আর তাঁর ভারী কাশি হয়েছিল; মনে করলেম আজ বুঝি বেচারির আর যাওয়া হয় না। কী আশ্চর্য! ৭টা বাজতে না বাজতেই দেখি তিনি ফিট্‌ফাট্

২০৯