সেগুলি পালন করেন কি না? তুমি হয়তো জানো ইংরেজেরা এক টেবিলে তেরো জন খাওয়া অত্যন্ত অলক্ষণ মনে করেন, তাঁদের বিশ্বাস তা হলে এক বৎসরের মধ্যে তাঁদের একজনের মৃত্যু হবেই। এক জন ইঙ্গবঙ্গ যখন নিমন্ত্রণ করেন তখন কোনোমতে তেরো জন নিমন্ত্রণ করেন না; জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ‘আমি নিজে অবিশ্যি বিশ্বাস করি নে, কিন্তু যাঁদের নিমন্ত্রণ করি তাঁরা পাছে কষ্ট পান তাই জন্যে বাধ্য হয়ে এ নিয়ম পালন করতে হয়।’ খুব উদারহৃদয় বটে! কিন্তু দেশে গিয়ে এ উদারতা কোথায় থাকে? তুমি হয়তো একটি সামান্য দেশাচার পালন করলে তোমার বাপ মা, ভাই বোন, তোমার সমস্ত দেশের লোক অত্যন্ত আহ্লাদিত হন; তখন কি তুমি তাঁদের সকলের মনে কষ্ট দিয়ে সেই দেশাচারের উপর তোমার বুট-সুদ্ধ পদাঘাত কর না? এইরূপ পদাঘাত করতে পারলে ব’লে কি সমস্ত বৎসরটা অত্যন্ত মনের আনন্দে থাক না? সে দিন এক জন ইঙ্গবঙ্গ একটি বালককে রবিবার দিনে রাস্তায় খেলা করতে যেতে বারণ করছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করাতে বললেন, ‘রাস্তার লোকেরা কী মনে করবে?’ রাস্তার লোকের কুসংস্কারের অনুবর্তন করে তিনি যদি রবিবারে খেলা না করেন, তবে আত্মীয়স্বজনের কুসংস্কার বা সুসংস্কার বা নির্দোষ সংস্কার হুট করে রামনবমীর দিনে তিনি দেশে গোমাংস ভক্ষণ করেন কেন? Principle!!!
কুসংস্কার মানুষকে কতদূর অন্ধ করে তোলে তা বাঙলার অশিক্ষিত কৃষীদের মধ্যে অনুসন্ধান করবার আবশ্যক করে না, ঘোরতর সভ্যতাভিমানী বিলিতি বাঙালিদের মধ্যে তা দেখতে পাবে। হঠাৎ বিলেতের আলো লেগে তাঁদের চোখ একেবারে অন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বিলেতের কী দেখে তাঁরা মুগ্ধ হয়ে পড়েন?