পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sbo যাত্রাবদল শিখিয়াছিল। আগে বাপকে ভয় করিত, লোক-লজার ভয় রাখিত। এখন বয়সী। বাড়িবার সঙ্গে সঙ্গে বাপকে আর তেমন মানে না । , সতীশ স্ব-গ্রামেই থাকিত। প্ৰথম প্রথম পুত্রবধুর গ্রামের বাড়িতেই থাকিত । ক্ৰমে তাহারা চলিয়া গেল বিনয়ের বাসায় । সতীশের স্ত্রীর সেই উন্মাদ রোগ একেবারে কখনো সারে নাই, এই সময় বেশী করিয়া দেখা দিল । সেই জন্যই মাকে বিনয় দেশের বাড়ীতে রাখিয়াছিল। কিন্তু এতদিন সর্বদা দেখাশুনা করিত শুশ্ৰষা ও চিকিৎসার ক্ৰটি কখনো করে নাই । ক্রমে ক্রমে কিন্তু মাকেও সে অবহেলা করিতে লাগিল। একমাসেও একবার মাকে দেখিতে আসে না, অথচ সে মোটর কিনিয়াছে। এই ন’ মাইল পথ আসিতে কতক্ষণ লাগে ? শুধু পানদোষ নয়, আনুষঙ্গিক অনেক উপসৰ্গই জুটিয়াছে বিনয়ের। স্ত্রী-পুত্রকেও যন্ত্রণা দেয়, সংসারের ন্যায্য খরচের টাকা রাত্রে কোথায় গিয়া ব্যয় করিয়া আসে, কেহ জানে না | প্ৰায়ই সারারাত্ৰি বাহিরে কাটায়। মাঝে মাঝে দিনমানেও ডাক্তারখানায় বসে না । পসার কমিতে লাগিল, রোগীরা আসিয়া ফিরিয়া যায়। বৃদ্ধ বয়সে সতীশ ঘোর অর্থকষ্টে পড়িল । বিনয় বাপ-মাকে মাঝে মাঝে টাকা যে না দেয় এমন নয়, কিন্তু তাহাতে সতীশের চলে না । ছোট ছেলেটি দাদার অবস্থা দেখিয়া নিজের স্ত্রী পুত্ৰ লইয়া শ্বশুরবাড়ি চলিয়া গেল, সে-ও বাপ-মায়ের বিশেষ কোনো সংবাদ লয় না । সন্ধ্যা বেলা বসিয়া বসিয়া তামাক খাইতে খাইতে সতীশ অন্যমনস্ক ভাবে এই সব কথাই ভাবিতেছিল, এমন সময়ে উঠানে কাহাকে আসিতে দেখা গেল । -6क ? -আমি পটল, দাদা । সতীশ খুসি হইয়া একগাল হাসিয়া হকা-হাতে উঠিয়া দাড়াইল ।