পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাত্রাবদল SV) পুরুষ মানুষকে আমন অসহায় ভাবে কখনো কঁদতে শুনিনি, তখন বয়েস ছিল অল্প, লোকটীর কান্না শুনে যেন আমার চোেখও অশ্রুসজল হযে উঠল । তারপর তিনি চুপ কল্পেন, আমরা সবাই আবার চুপচাপ চলতে লাগলুম। শ্মশানে যখন পৌছানো গেল, রাত তখন সাড়ে সাতটা হবে । মৃতদেহ চিতায় উঠানো হোল। সেই সময় সর্বপ্রথম লক্ষ্য কল্পৰ্ম বধুটীর দুপাযে আলতা —কোথাও বেরুতে হোলে গ্রামের মেয়েরা পায়ে আলতা পরে থাকে জানতাম, মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল, মেয়েটি কি ভেবেছিল আজ কোন যাত্রার জন্যে তাকে দুপুরে আলতা পরতে হয়েছিল ? কপালে খানিকটা সিঁদুর-ভদ্রলোকটী নিজেই দিয়েছিলেন-বধুটীকে সর্বপ্রথম এই ভাল করে দেখে মনে হোল সত্যই সুন্দরী । টান টানা জোড়া ভুরু, পাণ্ডুর বর্ণের গৌর মুখ, অনিন্দ্য দেহকান্তি । মৃত্যুতেও যেন স্নান হয়নি, মুখের চেহারা দেখে মনে হয় যেন ঘুমিযে পড়েচে । মনে হচ্ছে গোলমালে এখুনি ঘুম ভেঙে উঠে পড়বে বুঝি। জলন্ত চিতার একটু দূরে সেই পাউরুটী ভেণ্ডার ও তার বন্ধু। পাউরুটী ভেণ্ডার আমার দিকে চেযে দাত বার করে হেসে বল্লো-যাক, আজ শীতের রাতটা কাটুবে ভালো-কি বলেন ? লালু চক্কোত্তির পরোটার দোকানে ভজিতে দিয়ে এসেছি। আমাদের শশী আচাৰ্য্যকে বসিয়ে রেখে এসেচি, রাত বারোটার মধ্যে এখানকার কাজ শেষ হয়ে যাবে-গাবম গরম বেশ তার বন্ধু বল্পে-মাংস কতটা ? কুলুবে তো ? -বাঃ জোনাজাৎ দেড়পোয়া হিসেব করে দিয়ে এসেচি-মোট তিনসেরকজন আছি আমরা, তুমি, আমি, যতীন বাবু যতীনবাবুর ভাইপো লালু, শশী আচাৰ্য্যি, ( আমার দিকে আঙ্গুল দিয়ে ) এই বাবু আমি বল্লুম-আমি খাবো না । দুজনেই আশ্চৰ্য্য হয়ে আমার দিকে চাইলে । আমার কথা যেন বুঝতেই r