পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Costa সামান্য জিনিষ। আন তিনেক দামের কলাই-করা চায়ের ডিস-পেয়ালা । যেদিন প্ৰথম আমাদের বাড়ীতে ওটা ঢুকল, সেদিনের কথা আমার বেশ মনে আছে । শীতকাল, সকাল-সকাল খাওয়া-দাওয়া সেরে লেপের মধ্যে যাওয়ার চেষ্টা করচি, এমন সময় কাকার গলার সুর শুনে দালানের দিকে গেলাম। কাকা গিয়েছিলেন দোকান নিয়ে কুলবেড়ের মেলায়। নিশ্চয়ই ভাল বিক্রী-সিক্রী হয়েছে ! উঠোনে দুখানা গরুর গাড়ী । কৃষাণ হরু মাইতি একটা লেপ-তোষকের বাণ্ডিল নামাচ্চে। একটা নৃতন ধামায একরাশ সংসারেব জিনিষ।--বেলুন, বেড়ী, খুন্তী, ঝাঁঝাবি, হাত। খান কতক নতুন মাদুর, গোটা দুই কঁাটাল কাঠের নতুন জলচৌকি। এক বোঝা পালংশাকের গোড়া, দু ভঁড় খেজুরে গুড়, আরও সব কি কি । কাক আমায় দেখে বললেন-নিবু একটা লণ্ঠন নিয়ে আয়-এটায় তেল নেই। আমি এক দৌড়ে রান্নাঘরের লণ্ঠনটা তুলে নিয়ে এলাম। পিসিমা হা-ই ক’রে উঠলেন, কিন্তু তখন কে কথা শোনে ? কাকাকে জিগ্যেস করলাম-মেলায় এবার লোকজন কেমন হ’ল কাক ? কাকা বললেন-লোকজন প্ৰথমটা মন্দ হয় নি, কিন্তু হঠাৎ কলেরা সুরু হয়ে গেল, ওই তো হ’ল মুস্কিল ! সব পালাতে লাগল, বাওড়ের জলে রোজ পাচটাছ’টা মড়া ফেলছিল, পুলিস এসে বন্ধ ক'রে দিলে, খাবারের যত দোকান ছিল সব উঠিযে দিলে, কিছুতেই কিছু হয় না, ক্রমেই বেড়ে চলল। শেষে প্ৰাণ নিয়ে পালিয়ে এলাম । বিক্রী-সিক্ৰী কঁাচকল, এখন খোরাকী, গাড়ী ভাড়া উঠলে বেঁচে যাই । খেতে বসে কাকা মেলার গল্প করছিলেন, বাড়ির সবাই সেখানে ব’সে । কি ক’রে প্রথমে কলেরা আরম্ভ হল, কত লোক মারা গেল, এই সব কথা । R