পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পেয়ালা ܘܶ বড় ছুটোছুটি ক’রে বেড়াতে হয় ; বাড়িতে বেশীক্ষণ থাকা আজকাল আর ब\g घ िन । সেদিন সন্ধ্যার গাড়ীতে কলকাতা আসব, আমার বিছানাপত্ৰ বেঁধে রান্নাঘরে চায়ের জন্যে তাগাদ দিতে গিয়েছি-কানো গেল আমার বড় ভাই-ঝি বলচেও পেয়ালাটাতে দিও না পিসিমা, বাবা মারা যাওয়ার পর মা ও পেয়ালাটাকে দেখতে পারে না দু চোখে আমি বল্লুম-কোন পেয়ালাটা রে ? কি হয়েচে পেয়ালার ? আমার ভাই-ঝি পেয়ালা নিয়ে এল, মনে হ’ল কাকার কেনা অনেক দিনের সে পেয়ালাটা । সে বল্পে - বৌদিদির অসুখের সময় এই পেয়ালাটা ক’রে দুধ খেতেন, তারপর বাবার সময়ও এতে ক’রে ওঁর মুখে সাবু ঢেলে দেয়া হত-মা বলে, আমি ওটা দেখতে পারিনে আমার এই জ্যাঠতুতো ভাইয়ের স্ত্রী কলকাতা থেকে আমাদের এখানে বেড়াতে এসে অসুখে পড়েন এবং তাতেই মারা যান। এর বছর দুই পরে কাকাও মারা যান। পৃষ্ঠত্রণ রোগে । কিন্তু এর সঙ্গে পেয়ালাটার সম্পর্ক কি ? যত সব মেয়েলি কুসংস্কার ! পরের বছর থেকে আমার টিউব ওয়েলের কাজ খুব জেকে উঠল, জেলা বোর্ডের অনেক কাজ এল আমার হাতে। আমার নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই, দূর দূরান্তর পাড়াগায়ের নানা স্থানে টিউব ওয়েল বসানো ও মিস্ত্রী খাটানোর কাজে মহা ব্যস্ত -বাকী সময়টুকু যায়। আর বছরের বিলের টাকা আদায়ের তদ্বিরে। সংসারেও আমাদের নানা গোলযোগ বেধে গেল । কাক যত দিন ছিলেন । কেউ কোনো কথাটি বলতে সাহস করেনি। সংসারের পুরোনো ব্যবস্থাগুলির বিরুদ্ধে। এখন-ই-সবাই হয়ে দাড়াল কৰ্ত্তা, কেউ কাউকে মেনে চলতে চায় না ।