পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উইলের খেয়াল RS রায়েদের ছাড়া আর কারু নেই। সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিতে চায় নিম্ন চৌধুরী তার নামে ! অবনীর মুখ দিয়ে তো কথা বেরুলো না খানিকক্ষণ। তারপর বললেআচ্ছা কাকা, বাড়িতে একবার পরামর্শ ক’রে এসে কাল বলব। নিম্ন চৌধুরী বললে – বেশ বাবা, কিন্তু এ-সব কথা এখন যেন গোপন থাকে। পরদিন গিয়ে অবনী জানালে এ প্রস্তাবে তাদের কোন আপত্তি নেই। নিম্ন চৌধুরী বললে—বোমা তাহ’লে রাজি হয়েছেন ? দ্যাখে তা হ’লে আমার একটা সাধ আছে, সেটা বলি। আমার এত বড় বাড়িখানা পড়ে আছে, অনেক দিন এতে মা-লক্ষ্মীদের চরণ পড়েনি, ঠিকমত সন্ধ্যে পডে না । তোমাদের ও বাড়িটাও তো ছোট, ঘব-দোরে কুলোয় না, তা ছাড়া পুবোনোও বটে। তোমরা আমার এখানে কেন এস না। সবাশুদ্ধ ? তোমারই তো বাড়ি-ঘর হবে, তোমাকেই সব দিয়ে যখন যাব, তখন এখন থেকে তোমার নিজেব বাড়ি তোমরা না দেখলে নষ্ট হয়ে যাবে যে ! এ প্রস্তাবেও অবনী রাজি হ’ল, একটা ভাল দিন দেখে সবাই এ বাড়িতে চলে এল। অবনীব বীে নিসু চৌধুরীর বাড়ি কখনো দেখেনি, কারণ সে ও-পাড়ার বীে, এ-পাড়ায় আসবার দরকার তেমন হয়নি কখনো। ঘব বাডি দেখে বীে যেমন অবাক হয়ে গেল, তেমনি খুশী হ’ল। নিসু চৌধুরীর বাবা রোজগারের প্রথম অবস্থায় সখ ক’রে বাড়ি উঠিয়েছিলেন-তখনকাব দিনে সস্তাগণ্ডার বাজার ছিল দেখে অবাক হবার মত বাড়িই করেছিলেন বটে, পাড়াগায়ের পক্ষে অবিশ্যি । কলকাতার কথা ছেড়ে দেও ! মস্ত দোতলা বাড়ি, ওপরে নীচে বড় বড় সাত আটখানা ঘর, বারান্দা, প্ৰকাণ্ড ছাদ, সান-বাধানো উঠোন, ভেতব বাড়িতে পাকা রান্নাঘর, ইদারা, বাইরে প্ৰকাণ্ড বৈঠকখানা । বাড়ির পেছনে ফলেব বাগান, ছোট একটা পুকুর, বাধানো ঘাট-পাড়াগায়ে সম্পন্ন গোরস্ত বাড়ি যেমন হয়ে থাকে । ওরা বাড়িতে উঠে এসে জাকিয়ে সত্যনারায়ণের পূজো দিলে, লোকজন খাওয়ালে, লক্ষ্মীপূজো করলে ! সবাই বললে অবনীর বৌয়ের পয় আছে, নইলে