পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কনে দেখা 8 গাছটার ওপর তার মায়া ছিল বেশী, তার খাতা ছিল-তাতে লেখা থাকতো কোন কোন মাসে কত তারিখে গাছটা নতুন ডাল ছাড়ালে। গাছটাও হয়ে পড়ল প্ৰকাণ্ড, মাটির টব বদলে তাকে পিপে-কাটা কাঠের টবে বসাতে হোল । মেসের বারান্দা থেকে নামিয়ে একতালায় উঠোনে বসাতে হােল। এ সবে লাগলো বছর পাচি ছয় । সেবার বাড়ীওয়ালার সঙ্গে বনিবনাও না হোতে আমাদের মেস ভেঙে গেল । দুজনে আর একত্র থাকবার সুবিধে হােল না, আমি চলে গেলাম ভবানীপুরে। হিমাংশু গিয়ে উঠলে শ্যামবাজার আর একটা মেসে। একদিন আমায় এসে বিমর্ষ মুখে বল্লে-কি করি জগদীশবাবু, ও মেসে আমার টবগুলো রাখবার জায়গা হচ্ছে না-অন্য অন্য টবের না হয়। কিনারা কৰ্ত্তে পারি, কিন্তু সেই এরিকা পামটা সেখানে রাখা একেবাবে অসম্ভব। একটা পরামর্শ দিতে পারেন। অনেকগুলো মেস দেখলাম, অত বড় গাছ রাখার সুবিধে কোথাও হয় না। আর টানাটানির খরচও বড় বেশী । আমি তাকে কোনো পরামর্শ দিতে পারিনি বা তারপর থেকে আমার সঙ্গে সেই থেকে আজকার দিনটি ছাড়া আর কোনোদিন দেখাও হয় নি । বাকীটা হিমাংশুর মুখে আজই শুনেচি । কোনো উপায় না দেখে হিমাংশু শেষে কোন বন্ধুর পরামর্শে ধৰ্ম্মতলার এক নীলামওয়ালার কাছে এরিকা পামের টবটা রেখে দেয়। রোজ একবার করে গিয়ে দেখে আসতো, খদ্দের পাওয়া গেল। কিনা। শুধু যে খন্দেরের সন্ধানে যেতো তা নয়, ওটা তার একটা ওজুহাত মাত্র-আসলে যেত গাছটা দেখতে । হিমাংশু কিন্তু নিজের কাছে সেটা স্বীকার কৰ্ত্তে চাইত না । দু’দিন পরে ষা পরের হয়ে যাবে তার জন্যে মায়া কিসের ? তবুও একদিন যখন গিয়ে দেখলে, গাছটার সে নধর, সতেজ শ্ৰী যেন স্নান