পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

उनाथोकउठा সকাল বেলা। রূপগঞ্জের ভাঙ্গা কালীবাড়ীর সামনে বাধানো বটতলায় নিয়মিত আডিডা বসেচে। এখানে প্ৰথমেই বলা উচিত, রূপগঞ্জ কোনো ব্যবসার জায়গা নয়,-কোনো কালে ছিল যে, এমন কোনো প্ৰমাণও নেই। রূপগঞ্জ নিতান্তই সাধারণ ছোট পাড়াগা-দু’শঘর ব্ৰাহ্মণের বাস ; এ ছাড়া কামার, কুমোর, জেলে ইত্যাদি অন্য জাত আছে। গঞ্জ থাকা তো দূরের কথা, গ্রামে একখানা মাত্র মুদীখানার দােকান। কিন্তু লোকে বারোমাস ধার নিয়ে নিয়ে দোকানের অবস্থা এমন করে তুলেচে, যে, দোকানের মালিক দোকান তুলে দিতে পারলে হঁাপ ছেড়ে বঁাচে-অথচ সে বেশ জানে এবং তার খরিদাররাও জানে যে দোকান একবার উঠে গেলে বাকী বকেয়া আদায় হবার আর কোনো আশাই থাকবে না। রূপগঞ্জে সবাই গরীব, পরস্পরকে ঠকিয়ে কোনো রকমে তারা দিন কাটিয়ে চলেচে । কালীবাড়ীর বটতলায় বসে এই সব কথাই হচ্ছিল-রোজই হয়, আজি ত্ৰিশবছর ধরে হয়ে আসচে। এর আগে কি হয়েচে না হয়েচে তার হিসেব নেই, কেননা সে-সব লোক এখন বেঁচে নেই। এ-গ্রামে খুব বুড়ো লোক বড় একটা দেখা যায় না-বিশেষ করে ভদ্রলোকের মধ্যে । তার আগেই তাদের রূপগঞ্জের কালীবাড়ীর আডার মায়া কাটুতে হয়, পৈতৃক আমন ধানের জমি ও আমবাগানের মায়া কাটাতে হয় । বিশ বছর ধরে গোপনে মনের কোণে পোষণকরা কাশীবাসের ইচ্ছাও পরিত্যাগ করতে হয় । পষ্ণু মুখুজ্যে তাই দুঃখ করে বলছিলেন : কি জানো নারাণ ভায়া ! এই জায়গাজমিগুলোই হয়েচে কাল-নইলে এ-গায়ের মুখে বঁটা মেরে কোনদিন বেরুতাম। এই আমাদের দুঃখু! বিদেশে যারা বেরিয়েচে, তারা বেশ দু’পয়সা