পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সার্থকতা (¢ርቅ পষ্ণু মুখুজ্যে বল্লেন : না উঠে যাবে কেন ? সবাই যদি উঠে যাবে, গাঁয়ে তবে থাকবে কে ? তোমাদের বাড়ীর পাশে খ্যামাপদ চাটুয্যেদের ভিটে এখনও পড়ে আছে-তোমরা দেখেনি। আমাদের একটু একটু মনে আছে, শ্যামাপদ চাটুয্যে এখানেই মারা যায়। তার স্ত্রী এখানকার সম্পত্তি বেচে কিনে বাপের বাড়ী চলে গেল, ছ’মাসের ছেলে নিয়ে । অবস্থা ভাল ছিল না, থাকবার মধ্যে ছিল ওই ঘাটের ধারের আমবাগানখানা-এখন মাখন কাকা কিনোচোন। আর কিছু ধানের জমি, তাতে বছর চলতো না। একশো টাকায় সম্পত্তি বিক্ৰী করে ফেল্পে, রাজকৃষ্ট জ্যাঠা কিনলেন, আমার বেশ মনে আছে। তারপর এখন আবার মাখন কাকা কিনে নিয়েচেন রাজকৃষ্ট জ্যাঠার ছেলের কাছ থেকে । তবে ফাকি দিয়ে কেনা সম্পত্তি, ওর অপবাদ আছে, ও ভোগে আসে না । হারাণ রায় এখানে সকলের চেয়ে বয়োবৃদ্ধ। তিনি বল্লেন ; অনেকদিন পরে শ্যামাপদর কথাটা উঠলো। শ্যামাপদদা আমাদের চেয়ে দশ পনেরো বছবের বড় ছিল। তা’হোলেও একসঙ্গে ছিপে মাছ ধরতে গিয়েছি খাঁ’দের পুকুরে । আহা, অল্প বয়সে মরে গেল। হঁ্যাহে, তার সে ছেলেটা বেঁচে আছে কিনা জানো ? তার অন্নপ্রাশনে নেমস্তন্ন খেয়ে এসেচি, বেশ মনে আছে। ছেলের মুখে ভাত দেওয়ার মাস দুই পরেই শ্যামপদদা মলে । আহা, সে সব কি আজকের কথা ! পষ্ণু বল্লেন : না। তাদেব আর কোনো খবরই পাওয়া যায় নি। অনেককাল । মধু লাহিড়ী বল্লেন : কি জানো, একবার এ গা থেকে বেরুলে আর কি কেউ ফিরতে চায় ? এই আমাদেরই যদি অন্য উপায় থাকতো, তবে কি আর এখানে পড়ে থাকতে যৌতুম ? এই যে আমার বাড়ি কাল রাত্তিরে কাগুটি হয়ে গেলমধু লাহিড়ীকে কথা শেষ করতে না দিয়েই পঞ্চ অসহিষ্ণুভাবে কি একটা বলতে যাচ্ছিলেন, এমন সময় পথের মোড়ে হঠাৎ মোটর গাড়ীর হর্ণের আওয়াজে তিনি