পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সার্থকতা (ሱ ፴ ই, রাজেন বঁাড় ষোকে কার মনে নেই ? বেশীদিনের কথা তো নয়, বড় জোর কুড়ি বছর আগে রাজেন মারা যায় । রাজেনের ছেলে এই ননী তখন দশ বারো বছরের ছেলে । এই মাঠে কালীতলায় লাফিয়ে লাফিয়ে খেলা করে বেড়াতাে—সবাই দেখেচে । রাজেন বাড়ুযে মহকুমার রেজেক্ট্রী আফিসে দলিল-লেখক ছিল। সেখানে শশীউকিলের বাসায় থাকতো। সপ্তাহের শেষে শনিবার সন্ধ্যার সময় পিঠে এক ক্যান্বিসের ব্যাগ বুলিয়ে, এক পা ধুলো নিয়ে বাড়ী আসতো-আবার সোমবার ভোর বেলা মহকুমায় ফিরতো। বিশ বছর আগে রাজেন বািড়য্যের লাঠির আগায় কেন্বিসের ব্যাগ-স্কুলান মূৰ্ত্তি গ্রামের পথে ঘাটে অতি সুপরিচিত ছিল। একদিন হঠাৎ খবর এল, কলেরা হয়ে রাজেন শশী উকিলের বাসাতেই মারা গিয়েচে । ননীর মা তার পরও বছর দুই এগায়ে ছিল, কিন্তু শেষকালে চলাচলতির কোন উপায় না দেখে এখান থেকে চন্দননগরে ভগ্নিপতির ওখানে চলে যায় । তারপর আর কোন খবর কেউ রাখে না। তাদের । সেই ননী আজ এতকাল পরে ফিরে এল নতুন মোটরে চড়ে। বিস্ময়ের প্রথম মুহুৰ্ত্ত কেটে গেলে সবাই দেখলেন, গাড়ীর পেছনের সিটে একটি মহিলা ও দু’টি ছোট ছোট ছেলে মেয়ে । হারাণ বলেন : সঙ্গে কে ননী ?, • • • • • বৌমা ? আরো ছি ছি, কি ছেলেমানুষ ! এসো, এসো, নামিয়ে নিয়ে এসো। এই রদুরে কিনা—এই কাছেই তোমার গরীব কাকার বাড়ী, এসো বৌমাকে আমার নিয়ে এসো। পঞ্চ উত্তেজিত ভাবে বল্লেন : তা কি কখনো হয় ? আমার সঙ্গেই বাবাজীর প্রথমে কথা হ’ল-আমার বাড়ীতেই এ-বেলাটা অন্ততঃ শেষে হারাণ রায়ই জয়ী হয়ে বিজয়গর্বে উৎফুল্প মুখে ননী ও তার স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের নিজের বাড়ীতে নিয়ে গেলেন ।