পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

५éकप्लेि बि VNO) জায়গাটার পাশে একটা খোলার ঘর। এই ঘরখানা ও তার অধিবাসীরা আমার কাছে বড় কৌতুহলের জিনিষ। হাত পাচেক লম্বা, চওড়াতে ওই রকমই হবে, এইতো ঘরখানা। এরই মধ্যে একটি পরিবার থাকে, স্বামী স্ত্রী ও দুটি শিশুসন্তান । না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত এইটুকু ঘরে কি ভাবে এতগুলি প্ৰাণী থাকে-তাদের জিনিষপত্র নিয়ে । কিন্তু সকলের চেয়ে অবিশ্বাসের বিষয় এই যে ওই পাচ বৰ্গহাত ঘরের এক কোণেই ওদের রান্নাঘর । আমি যখন ওখান দিয়ে যাই, প্ৰায়ই দেখতে পাই-উনুনে কিছু না কিছু একটা চাপানো আছে। বৌটি ছোট্ট ছেলে কোলে নিয়ে রাধাচে না হয় দুধ জ্বাল দিচ্চে ! তার বয়েস দেখলে বােঝা যায় না তেইশও হতে পারে, ত্ৰিশও হতে পারে। চল্লিশও হতে পারে । ঘোমটার কাছে ছেড়া, আধময়লা সাড়ী পরণে। হাতে রাঙা কড় কি রুলি। চােখ মুখ নিম্প্রভ, নিৰ্বন্ধিতার ছায়া মাখানো । স্বামী বোধহয় কোনো কারখানাতে মিস্ত্রীর কাজ করে, দু’একদিন সন্ধ্যার আগে ফিরবার সময় দেখোঁচি লোকটা কালিঝুলি মেখে ছোট্ট বালতি হাতে পাশের নাইবার জায়গায় ঢুকচে । আজও ওদের দেখলুম। দোরের কাছে বৌটি ছেলে কোলে নিয়ে বসে আছে, ছেলেকে আদর করচে । নির্বোধের মত আমার দিকে একবার চেয়ে দেখলে । সেই পায়রার খোপের মত ঘরটা, ছিটেবেড়ার দেওয়ালে মাটীর লেপ, তার ওপরে পুরোনো খবরের কাগজ আঁটা, কাগজগুলো হলদে, বিবৰ্ণ হয়ে গিয়েচে-দড়ির আলনায় ময়লা কাপড়-চােপড় ঝুলিচে। মনটা আরও দামে গেল। কি ক’রে এরা এ থেকে আনন্দ পায় ? কি ক’রে আছে ? কি অর্থহীন অস্তিত্ব ! কেন আছে ? আচ্ছা, ও ছেলেটা বড় হয়ে কি হবে ? ওই রকম মিস্ত্রী হবে তো, ওই রকমই খোলার ঘরে ছেলে বউ নিয়ে ওই ভাবেই মলিন, কুগ্ৰী, অন্ধকার, অর্থহীন জীবনের দিনগুলো একে একে কাটাতে কাটাতে এগিয়ে চলবে ততোধিক দীন, হীন মরণের দিকে। অথচ মা কত