পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓቅ.. যাত্রাবদল দাড়ী দুই-ই হোল। গোপ-দাড়ী এবং কুড়ি বছরে পা দেবার দেরী মাস কতক মোটে-তার পরে বছর দুই পরেই বাইশ বছর। কিন্তু তখনকার দু' বছর অনেক সময়-আজকালকার মত নয় । মন ছিল চিন্তাশূন্য, স্মৃত্তিবাজ, কৌতুকপ্রিয়,-দুবছর আসতে দেৱী হযে গেল। এল বাইশ বছর • • •চলেও গেল ! তখন যদি কেউ বলতেও যে আমার বয়েস কম, বাইশ বছর আর এমন কি বয়েস-তাহোলেও হয়তো তার কথা আমার বিশ্বাস হোত না, যেমন বারো বছর বয়েসে বিশ্বাস করিনি মায়েব কথা যে আমি ছোট-কিন্তু আসলে সে-কথা আমাকে কেউ বলেওনি । বরং আরো একটা ঘটনায় তার উল্টো কথাটাই একবার শুনলুম। তেইশ বছর বয়েসে আমার বিবাহের জন্য কোথা থেকে একটা সম্বন্ধ এল-আমি তখন থার্ড ইয়ারে পড়া চি ৷ ঘটক আমাকে দেখে বল্লে-ছেলের বয়েস একটু বেশী না ? বাবা সামনে বসে। বল্লেন, কোথায়, এইতো মোটে তেইশআমি ভাবলুম বেশতো ? বাবা ওরকম কথা কেন বল্লেন ? ছিঃ, ওরা কি মনে ভাবলে ? মোটে তেইশ মানে কি ? সেই থেকে আমাব বিশ্বাস হোল যে বিবাহ কারবারও আমার বয়েস আর নেই। ঘটক নিশ্চয় আমার লম্বা চওড়া মূৰ্ত্তি দেখে আমার বয়স বেশী আন্দাজ করেছিল--তেইশ বছরের অনুপাতে আমার চেহারা বড় ছিল । কিন্তু আমার সেই থেকে বিশ্বাস দাড়ালো অন্যরকম। চব্বিশ, পাঁচিশ, ছাব্বিশ, সাতাশ, আটাশ• • • ত্ৰিশ বৎসর বয়সে যেদিন পড়লাম, সেদিন থেকে মনে হোল এখন থেকে গম্ভীরভাবে চলাফেরা করতে হবে, সাদারিং ছাড়া অন্য রঙের জামা-পরা তো অনেকদিনই ছেড়েছিলুম, এখন থেকে ছোট বড় চুল ছাঁটা পৰ্য্যন্ত ছেড়ে দিলুম।