পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাইশ বছর। ዓs) তখন থাকতুম পাড়াগাঁয়ে, সেখানে কেউ কোন দিন একথা বলেনি যে আমার বয়েস খুব বেশী এমন কিছু নয়। পাড়াগাঁয়ে কি পুরুষ, কি স্ত্রীলোক, ত্ৰিশের পরেই বৃদ্ধত্বে পেঁৗছোয়, মনে তো বটেই, চেহারাতেও খানিকটা বটে। কারণ আমাদের মুখশ্ৰীকে আমরা অহরহ গড় চি, আমাদের ভাব ও চিন্তার দ্বারা, যেমন ভাস্কর বাটালি দিয়ে মূৰ্ত্তির মুখ গড়ে। এদের প্রভাব আমাদের মুখশ্ৰীর ওপরে অনেক বেশী, অন্তরের তারুণ্য মুখশ্ৰীতে তো বটেই, সারাদেহের ওপর প্রভাব বিস্তার করে । এমন কি দৈহিক স্বাস্থ্যের ওপরও । বাল্যের কত সুন্দর মুখ ছেলেকে যৌবনে হতশ্ৰী, হীনশ্ৰী হ’তে দেখোঁচি, শিক্ষার ও কালচারের অভাবে । বয়েস বাড়বার সঙ্গে সঙ্গে কত লোকেরও দেখোঁচি, বিধাতা যেন তাদের দেহ ও মুখশ্ৰীকে এমন কি চােখের দৃষ্টি পৰ্যন্ত ভেঙ্গে গড়েচেন । এ সব অবান্তর কথা যাক । তারপর আজ এতকাল পরে যখন পঞ্চাশের কোঠায় বয়েস চলচে, কাগজে পত্রে লোকের মুখে শুনি কুড়ি বছর বয়েস থেকে তরুণ বয়েসের নাকি সুরুমোটের ওপর বাইশ বছরটা যে নিতান্ত তরুণ বয়েস, এতকাল পরে তা’ বুঝেছি খুব ভাল করেই। কারণ আমার বড় ছেলেরই প্ৰায় হ’তে চলেচে। ওই। কিন্তু শুনলাম কখন, যখন আর বয়োবৃদ্ধ ভীষ্ম পিতামহ মৰ্ত্ত্যধামে ফিরে এলেও আর আমাদের তরুণ বলতে সাহস করবেন না, স্নেহপরবশ হয়েও নয়, লোকআলজার ভয় একটা আছে তো ? - হায়রে আমার বাইশ বৎসরের প্রথম যৌবন, তুমি যখন এসেছিলে, তখন তােমায় চিনিনি, তারপর পৃথিবী নিজের কক্ষপথে বহুদূরে চলে গিয়েচে সে দিনটির পরে, আজ আর তোমার জন্যে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে। লাভ কি ? কিন্তু মুস্কিল এই যে তখন একথা বল্পেও বিশ্বাস করতুম না। একটা কথা মনে এল। চব্বিশ বছর