পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈদ্যনাথ ԳԳ কিন্তু এ সকল কথাই আমি শুনিয়াছিলাম এক তরফা-বদিনাথের শত্রুপক্ষের মুখে । অর্থাৎ তার সৎমা ও বাবার মুখে । বদিনাথের স্বপক্ষেও হয়ত অনেক কথা বলিবার আছে, কিন্তু সে কথা আমি শুনি নাই । বদিনাথকে আজ এ অবস্থায় দেখিয়া মনে মনে তাহার উপর সহানুভূতি হইল-বলিলাম-ভিজচিন্স কেন ? আয় ছাতির মধ্যে। তারপর এ অবস্থায় কোথা থেকে ? শ্ৰীরামপুরে যাস নি। আর ? শ্ৰীরামপুরেই সেজ মামার শ্বশুর বাড়ী । বন্দিনাথ রাঙা দাঁত বাহির করিয়া একগাল হাসিল।-না দাদা, সেখানে বাবা বাড়ী ঢুকতে দ্যায় না। বলে, টাকা রোজগার করবি নে তো বসে বসে তোকে খাওয়ায় কে ? গেছলাম আষাঢ় মাসে । বাবা হুকুম দিয়ে দিলে আমার ভাত বন্ধ করে দিতে। রাত্তিরে ইস্কুল ঘরে শুয়ে থাকতুম। বাবা দোকানে খাতা লিখতে বেরিয়ে গেলে মাকে গিয়ে বলতুম, ভাত দাও নৈলে কি আমি না খেয়ে মরবো না কি ? মা চুপি চুপি খাইয়ে দিত। আবাব এসে সারাদিন ইস্কুল ঘরে শুয়ে থাকতুম। এ রকম কোরে ক'দিন কাটে ? সতোরই আষাঢ় বাড়ী থেকে বেরিয়েচি আবার । বলিলাম। এ ক’দিন ছিলি কোথায় ? -গাড়ীতে গাড়ীতে বেড়াচ্চি। পরশু দিল্পী এক্সপ্রেসে বেনারস গেছ ব্লুম, আজ এই এলুম। পথে পথেই ঘূৰ্বাচি ক’দিন-আমার তো আর টিকিট লাগে না। ধরবে কে ? এ গাড়ীতে চেকার এল, ও গাড়ীতে গিয়ে বসলুম। নিতান্ত ধরলে বল্লুম, গরীব ভিখিরী, পয়সা নেই। বল্পে নেমে যাও। নিতান্ত গালমন্দ দিলে তো নেমে গিয়ে পরের ট্রেণে আবার চড়লুম। গাড়ীর মধ্যে বসে থাকলে তৰু তো বৃষ্টির হাত থেকে বঁচি । বৃষ্টিটা আবার জোরে আসিল । দু’জনে একটা গাড়ী-বারান্দার নীচে